দৈনিক শিক্ষাডটকম, মুরাদ মজুমদার: নানা দুর্নীতির দায়ে ময়মনসিংহের বিতর্কিত সেই শিক্ষক নেতা মো. আবুল কাসেম এবার শাস্তির মুখোমুখি হয়েছেন। নানা অভিযোগের সন্তোষজনক উত্তর না দেয়ায় তার বেতন কমানো হয়েছে।
সম্প্রতি শিক্ষা অধিদপ্তরের বিভাগীয় উপ পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
মো. আবুল কাসেম ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার চাঁনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে কর্মরত।
জানা যায়, মো. আবুল কাসেমের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ওঠার পরিপ্রেক্ষিতে বিভাগীয় মামলা হয়। মামলাটি তদন্ত করে দুর্নীতির সতত্যা পায় ডিডি অফিস। এবং একইসঙ্গে ডিডি অফিসের আদেশে তার বেতন কমানোর শাস্তি দেয়া হয়।
আরো পড়ুন: শিক্ষক নেতার তিন কোটি টাকা ঘুষ নেয়ার তথ্য ফাঁস (ভিডিও)
এর আগে গত বছরের শেষের দিকে এই শিক্ষক নেতার বিরুদ্ধে প্যানেল করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পাইয়ে দেয়ার আশ্বাসে তিন কোটি টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগ ওঠে।
প্যানেল করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে নিয়োগ প্রত্যাশীদের অভিযোগ ছিলো, নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও মৌখিকে বাদ যাওয়া প্রায় এক হাজার প্রার্থীর কাছ থেকে এ বিপুল অঙ্কের টাকা ঘুষ নিয়েছেন বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম।
প্রায় এক হাজার প্রার্থীর কাছ থেকে তিন কোটি টাকা নেয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত কাসেমসহ দুই শিক্ষক নেতা।
ঘুষের টাকা দিলেও শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হয়নি প্যানেল করে নিয়োগ প্রত্যাশীদের। সরকার প্যানেল করে শিক্ষক পদে নিয়োগের দাবি সরাসরি নাকচ করে দিলেও প্যানেল করে চাকরি পাইয়ে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে নেতারা কোটি কোটি টাকা হাতিয়েছেন।
নিয়োগ না পেয়ে অবশেষে ঘুষের টাকা ফেরত চাচ্ছেন প্যানেল প্রত্যাশীরা।
যদিও ঘুষ বাবদ কোটি টাকা নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শিক্ষক নেতা মো. আবুল কাসেম।
তিনি দাবি করেছেন, প্যানেল প্রত্যাশীদের অভিযোগ সঠিক নয়। তাদের কাছ থেকে ঘুষ নেয়ার কোনো প্রমাণ নেই।
কাসেম যুক্তি দেখান যে, তারা তো বেকার, তারা তিন কোটি টাকা পেলো কোথায়?
অপর দিকে প্যানেল প্রত্যাশীরা দাবি করেছেন, আবুল কাসেম যে টাকা নিয়েছেন তার প্রমাণ তাদের কাছে আছে। তারাও ঘুষ বাবদ দেয়া টাকা ফেরত পেতে আইনের আশ্রয় নেবেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে, শুরু থেকেই প্যানেলের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ সম্ভব নয় বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছিলো প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ইমরান হোসেন দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের যেসব প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও মৌখিকে বাদ পড়েছেন তাদের প্যানেল করে শিক্ষক পদে নিয়োগের আশ্বাসে তিন কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন মো. আবুল কাসেম।
ভাইভায় উত্তীর্ণ হতে না পেরে আমরা প্যানেল করে শিক্ষক পদে নিয়োগের দাবি জানিয়েছিলাম। শিক্ষক নেতা আবুল কাসেম কয়েক হাজার প্রার্থীকে নিয়োগ পাইয়ে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। দশ কোটি টাকার চুক্তি করেছিলেন। প্রায় এক হাজার প্রার্থীর কাছ থেকে তিন কোটি টাকা তুলে তা ওই শিক্ষক নেতাকে দেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, প্রায় এক হাজার প্রার্থীর কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা তুলেছেন প্যানেল প্রত্যাশী নেতা আব্দুল কাদের, আলী হাসান ও বাবুল মুন্সি। সে টাকা শিক্ষক নেতা আবুল কাসেম ও শিক্ষক নেতা আশিককে দেয়া হয়েছিলো। আবুল কাসেমের সঙ্গে চুক্তি ছিলো দশ কোটি টাকা দেয়ার। ওই টাকা ঘুষ দিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী, সচিব, অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতিকে ‘ম্যানেজ’ করে কয়েক হাজার প্রার্থীকে প্যানেল করে শিক্ষক পদে নিয়োগ দেয়া হবে বলে আশ্বাস দেয়া হয়েছিলো।
শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।