বরিশালের গৌরনদী পৌরসভার মেয়র পদে উপনির্বাচনে প্রার্থীর কাছ থেকে ঘুস নেওয়ার অভিযোগে মামলায় এক প্রিজাইডিং ও দুই সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতের বিচারক এ আদেশ দেন। তারা হলেন, সরকারি গৌরনদী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ও গৌরনদী বন্দর সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার মো. সাইদুর রহমান, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও গৌরনদী জাতীয় মহিলা সংস্থার কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার ভদ্র, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও উত্তর কান্ডপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন।
বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন, গোপন সংবাদে জানতে পারি পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের সরকারি গৌরনদী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ও গৌরনদী বন্দর সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার মো. সাইদুর রহমান, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও গৌরনদী জাতীয় মহিলা সংস্থার কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার ভদ্র, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও উত্তর কান্ডপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন ভোটের আগের দিন (মঙ্গলবার) রাত ৯টায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মোবাইল প্রতীকের মেয়র প্রার্থী এইচএম জয়নাল আবেদীনের কাছ থেকে ঘুস নিয়েছেন। বিষয়টি জানার পর ভোট চলাকালীন বুধবার আমি, বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসার মো. আলাউদ্দিন, বরিশাল জেলা সিনিয়র অতিরিক্ত নির্বাচন অফিসার ও উপনির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার অহিদুজ্জামান মুন্সী, কেন্দ্রে দায়িত্বরত পুলিশ উপ-পরিদর্শক মো. আব্দুল কাইয়ুম একদল পুলিশ নিয়ে কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে আসামিদেরকে একটি কক্ষে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আসামিরা ঘুস নেওয়ার কথা স্বীকার করেন। এ সময় আসামিরা বলেন, মোবাইল ফোন প্রতীকের মেয়র প্রার্থী এইচএম জয়নাল আবেদীন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র মো. হারিছুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন মুন্সী মঙ্গলবার রাতে ভোট কেন্দ্রে এসে বকশিসের কথা বলে তাদেরকে ৮ হাজার টাকা ঘুস দেন। একপর্যায়ে ঘুসের টাকা বের করে দিলে পুলিশ ৮ হাজার টাকা জব্দ করে তালিকা তৈরি করেন। এ সময় ঘুস গ্রহণের অভিযোগে ওই ৩ কর্মকর্তাকে আটক করে পুলিশ।
গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাজাহারুল ইসলাম জানান, সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও গৌরনদী নির্বাচন কর্মকর্তা সাইদুর রহমান সরকারি গৌরনদী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে প্রার্থীর কাছ থেকে ঘুস নেওয়ার অভিযোগে প্রিজাইডিং অফিসার মো. সাইদুর রহমান, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার সঞ্জয় কুমার ভদ্র ও দেলোয়ার হোসেনকে আসামি করে বৃহস্পতিবার গৌরনদী থানায় মামলা করেন। আটক ওই ৩ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে মেয়র প্রার্থীসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের ওই ৩ নেতাকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে পরিদর্শক (তদন্ত) মাজহারুল ইসলাম জানান।
এদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র হারিছুর রহমান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন মুন্সী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য একটি মহল আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে আসছে।