অবসরে যাওয়া শিক্ষককে ঘোড়ার গাড়িতে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
গত শনিবার এমন ব্যতিক্রমী বিদায় দিয়েছে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার তারালী ইউনিয়নের ৮০ নম্বর তেঁতুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এর আগে ৩০ বছর শিক্ষকতা করে অবসরে যান ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবুজার গাফ্ফারী (৫৯)। আর তার কর্মজীবনে নানা সফলতার কারণে গুণী ওই শিক্ষকের অবসরজনিত বিদায়ের দিনটাকে স্মরণীয় করতে আয়োজন করা হয় জাঁকজমকপূর্ণ এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের।
বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, ৩০ বছর ৪ মাস একই বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শেষে অবসরে গেছেন প্রধান শিক্ষক আবুজার গাফ্ফারী (৫৯)।
১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দের ২ ফেব্রুয়ারি তেঁতুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন তিনি। ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে ৩০ মে ছিলো তার শেষ কর্মদিবস।
দীর্ঘ এ সময়ে প্রধান শিক্ষক আবুজার গাফ্ফারীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনসহ সব ক্ষেত্রে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেন।
ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে প্রধান শিক্ষককে বাড়ি থেকে এনে নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা ক্রেস্ট ও হরেক রকম উপহার সামগ্রী দেয়া শেষে আবারো ঘোড়ার গাড়িতে পৌঁছে দেয়া হয় বাড়িতে।
শনিবার বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসএমসির সভাপতি রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার শেখ মেহেদী হাসান সুমন।
প্রাক্তন শিক্ষার্থী পবিত্র স্বর্ণকার ও সেলিম আহম্মেদের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শেখ ইকবাল আলম বাবলু, ফারজানা শওকাত আফি, তারালী ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হোসেন ছোট, উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মিজানুর রহমান, স্থানীয় ইউপি সদস্য প্রসাদ কুমার সরকার প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে নারায়ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান, নলতা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ারুল হক, উপজেলা সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি এসএম গোলাম রহমান, বিশ্ববরেণ্য ক্রিকেটার মোস্তাফিজুর রহমানের বাবা আবুল কাশেম গাজী, বিটিজিআর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মোস্তফা কামাল লাচ্চু, প্রধান শিক্ষক মনোয়ারুল ইসলাম, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক সাধন স্বর্ণকারসহ প্রাক্তন শিক্ষার্থী, অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষক আবুজার গাফ্ফারীর কর্মময় জীবন সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য দেন।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, এসএমসির সদস্যরা, প্রাক্তন শিক্ষার্থী, বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।