শিক্ষা গ্রহণের আগেই ঝরে পড়তে শুরু করছে চিলমারী উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের আমতলা এলাকার চরের শিশুরা। শিক্ষা আলো থেকেও বঞ্চিত আমতলা চরের শতশত শিশু। শিশুরা যেন শিক্ষা গ্রহণের আগেই ঝরে না পড়ে সেজন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অফিসার মো. মাহবুবুর রহমানের উদ্যোগে স্থানীয়দের সহযোহিতায় চালু হয়েছে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়ের কার্যক্রম ও পাঠদান শুরু হওয়ায় শিশুদের মাঝে ফিরছে শিক্ষা। অভিভাবদের মাঝেও দেখা দিয়েছে আশার আলো।
জানা গেছে, কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের আমতলার চর এলাকায় বেশ কয়েক বছর ধরে স্কুল ছিলো না। ফলে, শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত ছিলো ওই এলাকার শিশুরা। এখানে চরশতাধিক পরিবার বসবাস করে। চরের মানুষজন চিকিৎসা, শিক্ষাসহ বিভিন্ন সেবা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় শতশত শিশু শিক্ষাজীবনে প্রবেশের আগেই ঝরে পড়তে শুরু করে। স্কুল না থাকায় শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত শিশুরা বিভিন্ন শিশুশ্রমে ঝুঁকে পড়ে। তবে, আমতলার চরে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে গড়ে তোলা হয় একটি আশ্রয়ণ কেন্দ্র।
প্রায় দেড় বছর আগে ওই চরে পরিদর্শনে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান।
স্থানীয় অভিভাবক ও শিশুদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আমতলা আশ্রয়ণ কেন্দ্রের একটি ঘরে অস্থায়ীভাবে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু করা হয়। বিদ্যালয়ের নামকরণ করা হয় আমতলা শহীদ মুক্তিযোদ্ধা প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়ের পাঠদান শুরু হওয়ায় এলাকার শিশুদের মাঝে বইতে শুরু করেছে শিক্ষার সু-বাতাস। বর্তমানে শিশু শ্রেণি, প্রথম শ্রেণি ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মোট ৫০ জন শিশু শিক্ষার্থীকে পাঠদান করাচ্ছেন স্থানীয় দুই নারী শিক্ষক। বর্তমানে উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় বিদ্যালয়টির কার্যক্রম চলছে।
বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছালমা খাতুন ও মো. সাগর দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, স্কুলটি হয়ে আমরা শিখতে শুরু করেছি।
শিক্ষিকা নাজমা আক্তার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ইউএনও স্যারের উদ্যোগে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় আমরা চেষ্টা করছি পাঠদানের মাধ্যমে শিশুদের শিক্ষা গ্রহণের। দ্রুত আমতলা চরে সরকারিভাবে বিদ্যালয় গড়ে তোলার আহ্বান করছি।
একই এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. রশিদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এ চরে প্রায় চারশত পরিবারের বসবাস। শতশত শিশু রয়েছে কিন্তু কোনো বিদ্যালয় ছিলো না। এ কারণে শিশুরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত ছিলো। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের উদ্যোগে আপতত শিশুদের ঝরে পড়া রোধে অস্থায়ীভাবে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু করা হয়েছে। এখানে সরকারিভাবে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা খুবই প্রয়োজন।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুবুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, কোনো শিশু যেনো শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত না হয় তাই আমরা চেষ্টা করছি। যেসব এলাকায় বিদ্যালয় নেই সেখানে স্থানীয়দের সহযোগিতায় শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে।