‘কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি’- একুশের প্রথম কবিতার রচয়িতা মাহবুব উল আলম চৌধুরীর নামে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন পাবলিক লাইব্রেরির নামকরণ করা হয়েছে।
ভাষার মাসের প্রথমদিনে বুধবার নগরীর লালদিঘীর পাড়ে প্রায় ১৫০ বছরের পুরনো চসিক পাবলিক লাইব্রেরির নতুন নামফলক উন্মোচন করেন সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। এ সময় একুশে পদকপ্রাপ্ত সমাজবিজ্ঞানী অনুপম সেনও ছিলেন।
মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত স্বাধীনতার সংগ্রামে ভূমিকা রাখা চট্টগ্রামের বীর সন্তানদের নামে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ ও নামকরণের ঘোষণা দেন।
মেয়র বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে তরুণ ছাত্রনেতারা যখন বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে লড়ছেন, রক্ত ঝড়াচ্ছেন তখন কবি মাহবুব উল আলম ভাষা আন্দোলনের প্রথম কবিতা রচনা করেন। বীর চট্টগ্রামের এই কৃতি সন্তানের নামে লাইব্রেরির নামকরণ করতে পেরে আমি গর্বিত।’
প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম সেন কবি মাহবুব উল আলমের প্রতিবাদী চেতনাকে ধারণ করার জন্য তরুণ প্রজন্মকে আহ্বান জানান।
চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, কাউন্সিলর নিছার উদ্দিন আহমদ, ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, গোলাম মোহাম্মদ জুবায়ের, আবদুস সালাম মাসুম, পুলক খাস্তগীর, রুমকি সেনগুপ্ত, কবি মাহবুব উল আলমের জামাতা স্থপতি ইশতিয়াক আহমদ আলম চৌধুরী, সচিব খালেদ মাহমুদ, মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, চসিকের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, উপ-সচিব আশেক রসুল চৌধুরী টিপু অনুষ্ঠানে ছিলেন।
মাহবুব উল আলম চৌধুরী চট্টগ্রামে ‘সর্বদলীয় রাষ্টভাষা সংগ্রাম পরিষদ কমিটি’র আহবায়ক ছিলেন। যুগ্ম আহবায়ক ছিলেন চৌধুরী হারুনুর রশীদ এবং এম এ আজিজ। ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দের ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণের ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মাহবুব উল আলম চৌধুরী ‘কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি’ কবিতাটি রচনা করেন। ঢাকায় হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে চট্টগ্রামের লালদিঘী ময়দানে ২৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে অনুষ্ঠিত সর্বদলীয় প্রতিবাদ সভায় কবিতাটি আবৃত্তি করেন চৌধুরী হারুনুর রশীদ। কয়েকদিন পর তৎকালীন মুসলিম লীগ সরকার কবিতাটি বাজেয়াপ্ত করে।
চট্টগ্রামের রাউজানে জন্ম নেওয়া মাহবুব উল আলম চৌধুরী একুশের প্রথম কবিতা রচনার জন্য ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মরণোত্তর ‘একুশে পদকে’ ভূষিত হন।