দৈনিক শিক্ষাডটকম, নেত্রকোণা : চাকরি দেবেন বলে টাকা নিয়েছিলেন নেত্রকোণার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষক। কিন্তু চাকরি তো হলোই না, শেষে হাতিয়ে নেওয়া টাকা ফেরত নিয়েও টালবাহানা করেন তিনি। দীর্ঘদিন টাকা ফেরতের আশ্বাস দিয়েও না দেয়ায় বাধ্য হয়ে মামলা করেন ভুক্তভোগী।
রোববার (৩১ মার্চ) আদালতে মামলার হাজিরা দিতে গেলে বিচারক অভিযুক্ত শিক্ষক এসএম সাজ্জাদুল হককে (৫৫) কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম এস এম সাজ্জাদুল হক (৫৫), তিনি জেলার বারহাট্টা উপজেলার আশিয়ল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। আর ভুক্তভোগী আল আমিন (২৬) একই উপজেলার বিক্রমশ্রী গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক সাজ্জাদুল হক ও আল আমিন পূর্ব পরিচিত। গত এক বছর আগে নেত্রকোণায় শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে গাড়িচালক পদে আবেদন করেন আল আমিন। চাকরি পাইয়ে দেয়ার কথা বলে সাজ্জাদুল আল আমিনের কাছ থেকে ঘুষ বাবদ ৫ লাখ টাকা নেন। কিন্তু চাকরি না হওয়ায় শর্ত অনুযায়ী টাকা ফেরত দেয়ার কথা থাকলেও তিনি দেননি।
এ নিয়ে আল আমিন গত ২৭ ডিসেম্বর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। কিন্তু প্রতিকার না পেয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি নেত্রকোণার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন আল আমিন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ওই দিন সাজ্জাদুল হকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জরি করেন। পরে সাজ্জাদুল উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন। আজ রোববার নেত্রকোণা আদালতে হাজিরা দিতে গেলে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার বাদীর আইনজীবী মীর্জা হুমায়ুন এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, অভিযুক্ত এসএম সাজ্জাদুল হক এর আগে উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের জামিন নিয়েছিলেন। জামিনের শর্তানুযায়ী রোববার নেত্রকোনা চিফ জুডিশিয়াল আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে বিচারক তা নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বাদী আল আমিন বলেন, সাজ্জাদুল হককে এলাকার অনেকের সামনে টাকা দিয়েছি। চাকরি না হলে টাকা ফেরত দেবেন বলেছিলেন। এখন চাকরিও হয়নি, টাকাও দিচ্ছেন না। তাই তার বিরুদ্ধে মামলা করেছি। আশা করছি ন্যায়বিচার পাব।
বারহাট্টা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, একটি মামলায় প্রধান শিক্ষক সাজ্জাদুলকে আদালত কারাগারে পাঠিয়েছেন বলে খবর পেয়েছি। এ সম্পর্কিত কাগজপত্র পাওয়ার পর নিয়মানুযায়ী তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হবে।