গাড়ির নিচে চাপা পড়ে আটকে যাওয়া এক নারীকে রাস্তায় ছেঁচড়ে নিয়েই পালাতে ছুট লাগান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাবেক শিক্ষক। তবে পালাতে পারেননি তিনি। জনতার হাতে ধরা পড়ে গণধোলাই খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তিনি। মৃত্যু হয়েছে ওই নারীর।
শুক্রবার বিকেল তিনটার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের উল্টো পাশের টিএসসি অভিমুখী সড়কে ঘটে এ দুর্ঘটনা।
জানা গেছে, নিহত নারীর নাম রুবিনা আক্তার (৪৫) আর গাড়ির চালক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক শিক্ষক জাফর শাহ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ব্যক্তিগত গাড়ি চালিয়ে শাহবাগ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে যাচ্ছিলেন ওই শিক্ষক। চারুকলা অনুষদের উল্টো পাশের টিএসসি অভিমুখী সড়কে এক নারী তাঁর গাড়ির নিচে পড়ে আটকে যান। তবে তিনি গাড়ি না থামিয়ে বেপরোয়া গতিতে চালাতে থাকেন। পথচারীরা তাকে থামানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। গাড়ির নিচে আটকে থাকা নারীকে নিয়েই টিএসসি থেকে বেপরোয়া গতিতে নীলক্ষেতের দিকে যান তিনি। পেছনে পথচারীরা তাকে তাড়া করেন। পরে নীলক্ষেতের মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ থেকে পলাশী অভিমুখী সড়কের মুখে চালককে আটকে ওই নারীকে উদ্ধার করেন পথচারীরা। চালককে গণপিটুনি দেয়া হয় সেখানে।
পরে দুজনকেই আহতাবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ওই নারীর মৃত্যু হয়। আর ওই শিক্ষকের চিকিৎসা চলছে।
হাসপাতালে রুবিনার ভাই জাকির হোসেন জানান, রুবিনা তার দেবরের সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে হাজারীবাগে তার বাসায় যাচ্ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বিপরীত পাশে মোটরসাইকেলটিকে একটি গাড়ি ধাক্কা দিলে রুবিনা গাড়ির সামনে পড়ে যান আর তার দেবর নুরুল আমিনও পাশে পড়ে যান। পরে গাড়িটি রুবিনাকে হিঁচড়ে নিয়ে দ্রুতগতিতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে থাকে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া জানান, ওই নারীকে আহত অবস্থায় জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। আর গণধোলাই খাওয়া প্রাইভেটকারের চালকও চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার নাম জাফর শাহ। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক বলে জানান তিনি।