শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিবেচনায় সরকারি নির্দেশনা রয়েছে শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রাখার। তবে এ নির্দেশনা অমান্য করে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কয়েকদিন ধরে শ্রেণি কার্যক্রম চলে আসছে। ওই স্কুলের শিক্ষকদের দাবি, শিক্ষার্থীরা এসেছেন তাই কয়েকটি ক্লাস নিচ্ছেন তারা।
এদিকে সরকারি নিদের্শনা বুঝতে না পেরে এ জেলার সিংহভাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হযবরল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বুধবার সকালে উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের চর পাত্রখাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাচ্ছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। এ সময় শ্রেণিকক্ষে সহকারী শিক্ষকরা পাঠদান করছেন। বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস নেয়া হচ্ছিলো।
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দাবি, বেশ কয়েক দিন ধরে শিক্ষকরা উপস্থিত হয়ে ক্লাস করাচ্ছেন।
শিক্ষার্থী রাতুল, জসিমসহ অনেকে জানান, গত ৪-৫ দিন ধরে স্কুলে ক্লাস হচ্ছে। অনেক স্কুলে স্যার, ম্যাডাম আসলেও ক্লাস হয় না। কিন্তু আমাদের ক্লাস হয়।
সহকারী শিক্ষকা জেসমিন আরা জবা ও রেজাউল আলম বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের উপস্থিত হবার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
শিক্ষকদের বিদ্যালয়ে আসতে দেখে শিক্ষার্থীরাও বিদ্যালয়মুখী হয়েছেন। তাই কিছু দিন ধরে কয়েকটি ক্লাস নেয়া হচ্ছে। প্রধান শিক্ষকের নির্দেশনায় ক্লাস নেয়া হচ্ছে।
পাঠদান কার্যক্রম পরিচালিত হবার কথা স্বীকার করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার মানবিক বিষয়টি বিবেচনা করে পাঠদান করানো হচ্ছে।
চিলমারী উপজেলার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা শিক্ষা অফিসার জাহিদুর রহমান বলেন, আমি উপজেলা মাসিক সমন্বয় মিটিংয়ে আছি। পরে এই বিষয়ে কথা বলবো।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক বিভিন্ন উপজেলার সহকারী ও প্রধান শিক্ষকরা জানিয়েছেন, সরকারের নির্দেশনা রয়েছে সকাল ৯টা থেকে ৩টা পর্যন্ত অফিস খোলা। অপরদিকে বিভিন্ন মিডিয়াতে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য শোনা যাচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। অফিস খোলা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ এমন সিদ্ধান্তে ধোয়াশা সৃষ্টি হয়েছে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মাঝে। আমরা খোঁজ নিয়েছি, কুড়িগ্রাম সদর, নাগেশ্বরী, ফুলবাড়ি, উলিপুর, চিলমারী, রৌমারী উপজেলায় স্কুল বন্ধ রয়েছে। আবার অনেক উপজেলার কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৯টা থেকে ৩টা পর্যন্ত বিদ্যালয়ে বাধ্যতামূলক অবস্থান করতে হচ্ছে।
তবে সদ্য যোগদান করা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সমেশ চন্দ্র মজুমদার বলেন, কুড়িগ্রামে কোনো সরকারি বিদ্যালয়ে পাঠদান পরিচালিত হচ্ছে এমন তথ্য আমার জানা নেই। বিদ্যালয়ে পাঠদান পরিচালনার কোনো নির্দেশনা আমরা পাইনি। কেউ যদি অতি উৎসাহী হয়ে পাঠদান করায় সেটা তাদের দায়ভার।
রংপুর বিভাগীয় উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখবো। আগামী রোববার থেকে পাঠদান শুরুর নির্দেশনা রয়েছে বলে জানান তিনি।