রাজবাড়ীতে রিফায়াত ইব্নে রইস আরাফ (১৮) নামের এক কলেজছাত্রকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে রাজবাড়ী বিনোদপুর পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) আসিফ আহমেদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গত সোমবার আরাফ রাজবাড়ীর পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশ সুপার জিএম আবুল কালাম আজাদ। অভিযোগকারী আরাফ রাজবাড়ী পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের নূরপুর এলাকার রইচউদ্দিন বাবুর ছেলে। তিনি রাজবাড়ী সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত রোববার দিবাগত রাত ১২টা ৪০ মিনিটে শিক্ষাসফর শেষে আরাফের বড় ভাই রিয়াসাত ইব্নে রইস শহরের মুরগির ফার্ম বাসস্ট্যান্ডে আসেন। তাকে আরাফ বাড়িতে নিয়ে আসেন। বাসায় এসে রইস লক্ষ করেন তার ল্যাপটপ ও একটি ব্যাগ বাসস্ট্যান্ডে ফেলে এসেছেন। তখন আরাফ মোটরসাইকেল নিয়ে আবার বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে ব্যাগটি নিয়ে বাসায় ফিরছিলেন। পথে রাজবাড়ী ইয়াসিন স্কুল সংলগ্ন ২ নম্বর রেলগেটে পুলিশ প্রশাসন তার মোটরসাইকেলের গতিরোধ করেন।
আরো পড়ুন :
ছাত্রের পকেটে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা, এসআইকে প্রত্যাহার
ছাত্রীকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই ফাঁসছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা
সে সময় এসআই আসিফ আহমেদ, কনস্টেবল জাহাঙ্গীর, কনস্টেবল সুকান্ত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। একপর্যায়ে আসিফ আরাফের শার্টের কলার ধরে ‘ইয়াবা ব্যবসায়ী’- বলে সম্বোধন করে মারধর করেন। পরে আসিফ তার পকেটে কিছু ঢোকানোর চেষ্টা করেন। এতে ব্যর্থ হয়ে তাকে বাসায় ফোন করে টাকা আনার জন্য বলেন। পরে ঘটনাস্থলে পরিবারের লোকজন ও বিভিন্ন ব্যক্তির উপস্থিতির কারণে আরাফকে এসআই ছেড়ে দেন। পরে ভোর ৫টার দিকে পুলিশের পোশাক পরিহিত অবস্থায় এসআই আসিফ আরাফের বাড়িতে গিয়ে ঘটনার দায় স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং পরবর্তী কোনো পদক্ষেপ না নিতে অনুরোধ জানান। যদি তার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয় তাহলে তিনি তাকে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেবেন বলে হুমকি দেন।
অভিযুক্ত এসআই আসিফ বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, গতকাল রাতে আমি ২নং রেলগেট এলাকায় ডিউটিতে ছিলাম। কিন্তু কোনো কলেজছাত্রকে হয়রানি করিনি।
ভুক্তভোগীর মা রুবিনা বানু জানান, ঘটনার পর ভোর ৫ টার দিকে এসআই আসিফসহ কয়েকজন কনস্টেবল পুলিশের পোশাক পরিহিত অবস্থায় আমাদের বাড়িতে আসেন। আসিফ আমাদের কাছে ক্ষমা চান এবং বিষয়টি গোপন রাখতে বলেন। রাজবাড়ী জেলা পুলিশ সুপার জিএম আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমি একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। সত্যতা মিললে ওই এসআই’র বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।