ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার সলিমগঞ্জ ইউনিয়নে এক মাদরাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রকে (১০) ধর্ষণরের অভিযোগ উঠেছে। ধর্ষণের শিকার ওই মাদরাসা ছাত্রকে অসুস্থ অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ ঘটনার পর ওই শিক্ষকের অপরাধ ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করায় অভিযুক্ত, মাদরাসার অধ্যক্ষ ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ তিনজনকে আসামি করে সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল আদালতে ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন।
বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট আমীরুল হক মানিক সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্ত করে মামলার প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন’।
মামলার এজাহার সূত্রে ও এলাকাবাসী জানায়, ওই শিশুটি স্থানীয় রিয়াজুল জান্নাত নূরানী হাফিজিয়া মাদরাসার হোস্টেলে থেকেই পড়ালেখা করতো। ঘটনার দিন গত ১ অক্টোবর দুপুরে ওই ছাত্রকে মাদরাসার এক শিক্ষক আনোয়ার হোসাইন (২৫) তার কক্ষে ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। এতে ওই ছাত্র পায়ুপথে প্রচণ্ড আঘাত পায়। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে চিকিৎসা দেয়া হয়।
ঘটনার পর মাদরাসার অধ্যক্ষ আল মামুন ও সলিমগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান সোহেলের কাছে ওই ছাত্রের পরিবার বারবার বিচার চেয়েও কোনো প্রতিকার না পেয়ে অবশেষে ঘটনার দুই সপ্তাহ পর সোমবার ওই ছাত্রের মা বাদী হয়ে আদালতে উল্লেখিত তিনজনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলাটি করেন।
ধর্ষণের সঙ্গে কেবল একজন শিক্ষক জড়িত থাকলেও, এ মামলায় কেন মাদরাসার অধ্যক্ষ ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে আসামি করলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে মামলার বাদী বলেন, ‘ধর্ষণকারী শিক্ষক মাদরাসা অধ্যক্ষের আপন ভাগ্নে হওয়ায়, অধ্যক্ষ তাকে ঘটনার পর পরই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছেন। আর আমাদের ভোটে নির্বাচিত চেয়ারম্যান ওই শিক্ষকের (আনোয়ার হোসাইন) কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়ে আমার ছেলের জন্য বিচারটা গত দুই সপ্তাহেও করেননি। বরং গত শুক্রবার চেয়ারম্যান এ ঘটনার ‘বিচার করতে পারবেন না’ বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। তাই এই দুইজনও এ ঘটনায় সমান অপরাধী বলে মনে করেছি।’
এ বিষয়ে মামলার ১ নম্বর আসামি অভিযুক্ত শিক্ষক আনোয়ার হোসাইন ও ৩ নম্বর আসামি মাদরাসা অধ্যক্ষ আল মামুনের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেও তাদের বক্তব্য নেয়া যায়নি। তবে মামলার ২ নম্বর আসামি সলিমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান সোহেল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি চেয়ারম্যান নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে স্থানীয় এমপির পছন্দসই নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করার পর থেকেই নানাভাবে আমাকে হয়রানি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ঘটনাটিও আমার বিরুদ্ধে একটি সম্পূর্ণ মিথ্যে ও বানোয়াট অভিযোগ। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত হলে, আমার বিরুদ্ধে আনীত এসব ভুয়া অভিযোগের কোনো সত্যতা খুঁজে পাবেন না ইন-শা-আল্লাহ।’