বগুড়ার শিবগঞ্জে আবু হুরায়রা (৯) নামে এক স্কুলছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার ভোরে তার বাড়ির পাশের বাঁশঝাড় থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ৫ কিশোরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
নিহত স্কুলছাত্র আবু হুরায়রা (৯) কড়িবাড়ি দক্ষিণপাড়ার মনজুরুল ইসলামের ছেলে ও স্থানীয় এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। অন্যদিকে আটক পাঁচজনের মধ্যে তিনজন হলেন স্থানীয় এক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র, একজন হাফেজিয়া মাদরাসায় পড়াশোনা করেন ও একজন এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। রোববার দিবাগত রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের নিজ নিজ বাড়ি থেকে আটক করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মোকামতলা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) আশিক ইকবাল জানান, আবু হুরায়রা ও আটক পাঁচ কিশোর প্রতিবেশী হওয়ার সুবাদে একসঙ্গে খেলাধুলা ও চলাফেরা করতো। রোববার স্কুলে টিফিন চলাকালীন সময়ে ওই পাঁচ কিশোর হুরায়রাকে খাওয়া দাওয়া কথা বলে ডেকে নেয়। পরে বিকেল ৪টার দিকে হুরায়রা কাছ থেকে তার বাইসাইকেল কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করে ওই পাঁচ কিশোর। এ সময় হুরায়রা বাঁধা দিলে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। পরে অভিযুক্ত পাঁচজন হুরায়রার লাশ বাঁশঝাড়ে ফেলে দেয়। এরপর এসএসসি পরীক্ষা দেয়া এক কিশোর স্থানীয় ডাকুমারা হাটে ১০ হাজার টাকা দামের বাইসাইকেলটি ২ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি করে দেয়। আটক হওয়া ওই পাঁচ কিশোর হুরায়রার বাইসাইকেল বিক্রি করে মুঠোফোন কেনার উদ্দেশে এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়।
তিনি জানান, হুরায়রা স্কুল ছুটির দীর্ঘ সময় পরেও বাড়ি না আসায় তার পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা ডাকুমারা হাটে হুরায়রার বাইসাইকেল দেখতে পেয়ে দোকানির বরাতে জানতে পারেন, এক কিশোর বিকেলের দিকে বাইসাইকেলটি বিক্রি করেছে। তাৎক্ষণিকভাবে হুরায়রা পরিবার পুলিশকে অবগত করে। এরপরেই অভিযানে নামে পুলিশ। পরে স্কুল থেকে টিফিনের সময় হুরায়রাকে ডেকে নেয়া পাঁচ কিশোরকে শনাক্ত করে পুলিশ। তদন্তের একপর্যায়ে নিশ্চিত হয় তাদের মধ্যে এসএসসি পরীক্ষা দেয়া কিশোর বাইসাইকেল বিক্রি করতে আসে। পরে ওই পাঁচ কিশোরকে আটক করা হলে তাদের দেখানো জায়গা থেকে হুরায়রার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ইন্সপেক্টর আশিক ইকবাল আরও জানান, হুরায়রা মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তার বাবা বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।