ঈদুল আজহার দিন। কিন্তু ওদের ঘরে আনন্দ এখনো অপূর্ণ। হয়তো সামর্থ সঙ্কটে কোরবানি হয়নি পরিবারে। ওদের ব্যথার সঙ্গী হতেই বুঝি সকাল থেকে মুষল ধারায় বৃষ্টি। কিন্তু এই অঝোর বৃষ্টি তাদের বেদনার সঙ্গী হতে পারলো না। ছাত্রীদের একটা দল যথাসময়ে জমায়েত হলো শেরেবাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়ে।
আগে থেকেই বলা ছিলো। কোন ছাত্রীর পরিবার কোরবানি দিতে অসর্মথ্য হলে তারা যেনো তাদের ক্লাস টিচারদের জানায়। তাই সভাপতি মহোদয়ের পক্ষে ক্লাস টিচারদের গ্রুপে নোটিশ করা হয়েছিলো। এ বিষয়ে ছাত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগের নির্দেশনাও দেয়া হয়েছিলো। সম্মিলিত উদ্যোগে কাজও হয়েছে। কোরবানি দিতে পারেননি এমন অনেক পরিবারের ছাত্রী ঈদের দিন এসেছে স্কুলে। কারো কারো ভেতর একটু জড়তা হয়তো কাজ করছিলো। কিন্তু সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ এসে সব জড়তা কাটিয়ে দিলেন।
বস্তুত গভর্নিং বডির সভাপতির নির্দেশেই এই আয়োজন। নিজের কোরবানির গোশত প্যাকেটজাত করে কন্যাসম ছাত্রীদের পরিবারের জন্য এনেছেন তিনি। ঈদের দিনে অস্বচ্ছল পরিবারের ছাত্রীরাও যাতে কোরবানির গোশত খেতে পারে, সেজন্যই এই আয়োজন।
সভাপতি মহোদয় গোশত বিতরণ শুরু করলেন। ছাত্রীদের মাথায় স্নেহের পরশ বুলিয়ে দিলেন। আমরা আবেগে বাকরুদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে দেখছি। ছাত্রীদের চোখেমুখে আনন্দের ঝিলিক। ঈদের আনন্দ যেনো পূর্ণতা পেলো ওদের।
যিনি এমন মহতি আয়োজনের উদ্যোক্তা, সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে স্কুলের ছাত্রী ও তাদের পরিবারকে এমন অনেক আনন্দঘন মুহূর্ত উপহার দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। তার নির্দেশে আজ কোনো ফটোসেশন হলো না। এমন আনন্দঘন মুহূর্তের ছবি মোবাইলের ফ্ল্যাশে নয়, গাঁথা রইলো বুকের গভীরে। আমরা কেবল কয়েকজন সীমাহীন ভালোলাগা নিয়ে ওই ঘটনার সাক্ষী হয়ে রইলাম। এমন আরো অনেক ঘটনা চাক্ষুস করার সুযোগ যেনো বিধাতা আমাদের দেন।
তাহামিনা আক্তার, প্রভাষক, শেরেবাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়, ঢাকা।