ছাত্রী নির্যাতনের বিষয়ে যা বললেন ইবির গণরুমের শিক্ষার্থীরা - দৈনিকশিক্ষা

ছাত্রী নির্যাতনের বিষয়ে যা বললেন ইবির গণরুমের শিক্ষার্থীরা

ইবি প্রতিনিধি |

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে এক নবীন ছাত্রীকে ছাত্রলীগ নেত্রী ও তার সহযোগীর দ্বারা নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ভূক্তভোগীর পর এবার মুখ খুলছেন গণরুমে থাকা অন্য শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে অন্তত চারজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হয় সাংবাদিকদের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গণরুমের এক ছাত্রী জানান, ওইদিন রাতে ওই মেয়েকে (ভূক্তভোগী) গণরুমের একটি কক্ষে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও চড় থাপ্পড় মারা হয়। আমরা যদিও যে রুমে নির্যাতন করা হয় তার পাশের রুমে ছিলাম। তবে, একটি দেয়ালের ওপারে এক হাত পরিমাণ ফাঁকা থাকায় সেখান দিয়ে সব কথা ও শব্দ শোনা যাচ্ছিল। 

তিনি আরও জানান, ওই মেয়েকে জোড়ে জোড়ে চড়-থাপ্পড় দেওয়া হয়। আমরা তার কান্নার শব্দও শুনতে পাচ্ছিলাম। ওই মেয়ের উপর নির্যাতনের শব্দ আমাদের রুমের অনেকেই নিতে পারছিল না। আমরা কয়েকজন কান্না করতে থাকি। কিছু সময় বাইরে গিয়েও বসে ছিলাম। রাত ১১টা থেকে দুইটা পর্যন্ত রুমে নির্যাতনের পরে একজন বলে রুমের বাইরে নিয়ে যেতে তখন তাকে ডাইনিংয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

পাশের রুমে অবস্থানকারী আরেক ছাত্রী জানান, নির্যাতনকারীদরে মধ্যে একজন পাশের বাকি তিনটা গণরুমের সবাইকে হুমকি দিয়ে বলেন, কেউ রুমের বাইরে বের হলে খবর আছে। এমনকি ওয়াশরুমেও যেতে দেওয়া হয়নি।  

একপর্যায়ে তারা ওই ছাত্রীকে প্রভোস্ট স্যারের বিরুদ্ধে গালাগালি দিতে বলে এবং ভিডিও করে। এমন নির্যাতন রাত সাড়ে তিনটা পর্যন্ত চলতে থাকে। পরে বাংলা বিভাগের এক শিক্ষার্থীর পরীক্ষা থাকায় সে চেচিয়ে বললে নির্যাতনকারীরা ভূক্তভোগীকে হলের ডাইনিংয়ে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে গ্লাস চেটে পরিস্কার করানো হয়।

গণরুমের ছাত্রীদের ভাষ্যমতে, নির্যাতনকারীদের মধ্যে এ সময় ফাইন আর্টস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হালিমা খাতুন উর্মী, আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের মীম, মুয়াবিয়াসহ কয়েকজন ছিলেন। 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মীম বলেন, আমি নির্যাতনের সময় ছিলাম না। আমার রুমেই ছিলাম। শুধু অন্তরা আপুর নির্দেশে ওই মেয়েকে ৩০৬ নম্বর রুম থেকে দোয়েল-১ নামক গণরুমে রেখে চলে আসি।

ইতোমধ্যে হাইকোর্টের নির্দেশে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তাবাসসুম নামে দুই শিক্ষার্থী ক্যাম্পাস ছেড়েছেন। একই সঙ্গে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধরী অন্তরাকে তদন্ত প্রতিবেদনের পূর্ব পর্যন্ত সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

বিষয়টি অধিকতর তদন্তে বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে একজন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও একজন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তার সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। কমিটিকে পরবর্তী সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসককে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এক আইনজীবীর করা রিটের শুনানি শেষে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

নির্যাতনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি করার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের করা কমিটির প্রতিবেদনও দাখিল করতে বলা হয়েছে।  

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে এক নবাগত ছাত্রীকে র‌্যাগিংয়ের নামে নির্যাতনের অভিযোগ উঠে।  

শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে রাত সাড়ে ১১টা থেকে রাত প্রায় তিনটা পর্যন্ত শারীরিক নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর। ভুক্তভোগী ফুলপরি ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী। র‌্যাগিংয়ের সময় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রীরা তাকে মারধর করে তার বিবস্ত্র ভিডিও ধারণ করে রাখে বলে অভিযোগ তার।  

সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে ভয় পেয়ে হল ছেড়ে বাসায় চলে যান ভূক্তভোগী ছাত্রী। র‌্যাগিংয়ের নামে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তার বিচার ও নিরাপত্তা চেয়ে মঙ্গলবার প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টা দপ্তর বরাবর লিখিত দিয়েছে ভুক্তভোগী। অপরদিকে সিনিয়রদের সঙ্গে বেয়াদবি ও বহিরাগত দিয়ে হুমকির শাস্তির দাবি চেয়ে নির্যাতিত ছাত্রীর বিরূদ্ধে পাল্টা অভিযোগ দিয়েছে ছাত্রলীগ নেত্রী অন্তরা।

বিষয়টি নিয়ে হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং শাখা ছাত্রলীগ পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।  

প্রায় দুই লাখ এইচএসসি পরীক্ষার্থীর পাঁচ লাখ খাতা চ্যালেঞ্জ - dainik shiksha প্রায় দুই লাখ এইচএসসি পরীক্ষার্থীর পাঁচ লাখ খাতা চ্যালেঞ্জ ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীরা, রোজ সম্মানী পাবেন ৫০০ টাকা - dainik shiksha ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীরা, রোজ সম্মানী পাবেন ৫০০ টাকা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে বেসরকারি মেডিক্যাল-ডেন্টালের ভর্তি ফি নির্ধারণ - dainik shiksha বেসরকারি মেডিক্যাল-ডেন্টালের ভর্তি ফি নির্ধারণ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক ঢাবিতে দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধে গণভোটের দাবিতে বিক্ষোভ - dainik shiksha ঢাবিতে দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধে গণভোটের দাবিতে বিক্ষোভ নিম্নমানের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ বন্ধ করে দেয়া হবে - dainik shiksha নিম্নমানের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ বন্ধ করে দেয়া হবে আসিফ নজরুলের সাথে কি ঘটেছিল জেনেভা বিমানবন্দরে - dainik shiksha আসিফ নজরুলের সাথে কি ঘটেছিল জেনেভা বিমানবন্দরে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0034160614013672