রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও সার এবং কীটনাশক ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান মুকুকে (৪৭) গুলি করে হত্যার ঘটনায় আরও ৩ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুইটি একনলা বন্দুক ও দুইটি ককটেল উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট ৮ আসামিকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ।
রোববার (৭ মে) সকাল ১১টায় পাংশা মডেল থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (পাংশা সার্কেল) সুমন কুমার সাহা। এ সময় স্কুলশিক্ষক হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন নিয়েও নানা তথ্য দেন তিনি।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার কলিমহর ইউনিয়নের নওরা বনগ্রাম গ্রামের মন্টু শিকদারের ছেলে সজীব শিকদার (২০), পাংশা উপজেলার শেখ পাড়া গ্রামের নূর আলী মন্ডলের ছেলে মো. রাসেল মন্ডল (২০) ও পাংশা উপজেলার কোলানগর গ্রামের সোহরাব শেখের ছেলে মো. রমজান শেখ (৪০)।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, মিজানুর রহমান পাংশা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও হোসেনডাঙ্গা বাজারের সার ব্যবসায়ী ছিলেন। গত ৩০ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে তার সারের দোকানের হালখাতা শেষ করে ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল বাড়ির ফিরছিলেন। পথিমধ্যে স্থানীয় বলাই বিশ্বাসের বাড়ির সামনে ভাঙা রাস্তা থাকায় মোটরসাইকেলের গতি কমলে আগে থেকেই ওত পেতে থাকা ৮ থেকে ১০ জন ছিনতাইকারী তার টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার উদ্দেশে গতিরোধ করে।
পরে ছিনতাইকারীরা তার নিকট টাকা না পেলে তার সঙ্গে কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ছিনতাইকারীরা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে মিজানুরের মাথায় গুলি করলে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ ঘটনায় পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে একদল দুষ্কৃতকারী এই হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণ করে এবং একজন সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করে।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী শাহানারা বেগম বাদী হয়ে গত মঙ্গলবার অজ্ঞাতনামা ৮ থেকে ১০ জনকে আসামি করে পাংশা মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের হলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রথমে ৫ আসামিকে গ্রেপ্তার করে। তাদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হলে তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সকল আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রাখা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রাত সাড়ে ১১টার সময় পাংশার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ আরও ৩ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের আজ আদালতে পাঠানো হবে।
সংবাদ সম্মেলনে সহকারী পুলিশ সুপার আসলাম, পাংশা মডেল থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান, পাংশা পুলিশের উপ পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উপ পরিদর্শক (এসআই) দিপঙ্কর কুমার কুন্ডু উপস্থিত ছিলেন।