শিমুল বিশ্বাস, দৈনিক শিক্ষাডটকম: সফটওয়্যার থেকে লিঙ্গ বাদ দিয়ে একাদশে ভার্তির আবেদনের পথ প্রশস্ত করেছে শিক্ষাবোর্ড। কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইনে এই প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা ছিলো গত রোববার সকালে। কিন্তু ভর্তিচ্ছুরা কিছুতেই আবেদন সম্পন্ন করতে পারছিলেন না। তাদের প্রক্রিয়া আটকে যাচ্ছিলো লিঙ্গ সংক্রান্ত মেন্যুতে। প্রতিবছরের মতো এবারও এ কাজের ঠিকাদার বুয়েটের সিএসই বিভাগ তখন জানিয়েছিলো, সফটওয়্যারের জটিলতা কাটানোর চেষ্টা চলছে। সন্ধ্যা ছয়টার পর সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু রোববার সন্ধ্যা নয়, প্রায় দেড় দিন পর গতকাল সোমবার বিকেলে লিঙ্গ সংক্রান্ত মেন্যুটিই বাদ দিয়ে সার্ভার সচল করা সম্ভব হয়। তবে, প্রোফাইল খোলার পর লিঙ্গ পরিচয়ের সুযোগ রাখা হয়েছে।
যদিও তারপরও অনেকেই দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানিয়েছেন, ভর্তির আবেদনের জন্য সার্ভারে ঢুকতে পারেননি তারা। আবার অনেকেই, আবেদন সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
বিকেল সাড়ে তিনটায় ভর্তি আবেদনের সাইটে লগইন করে দেখা যায়, একাদশ শ্রেণিতে স্মার্ট ভর্তির সিস্টেম, আমার প্রোফাইল, আবেদনকারীর প্রোফাইল, আবেদনকারীর তথ্য, ব্যক্তিগত তথ্য, এসএসসি তথ্য, আবেদনের অবস্থা, আবেদনপত্রের অবস্থা, পেমেন্টের অবস্থা, নির্বাচনের অবস্থা-সম্বলিত একটি ইন্টারফেস সামনে আসে। পরবর্তী ধাপে আবেদন অপশনে গিয়ে সেখানে সরাসরি আবেদন করা যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয়ভাবে শিক্ষাবোর্ড অনলাইনে ভর্তি আবেদন প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। আর প্রতিবছরের মতো এবারও বুয়েটের সিএসই বিভাগ আছে এই ভর্তি প্রক্রিয়াকরণের সফটওয়্যার তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে। তাই আশা করা হয়েছিলো, নির্বিঘ্নেই কাজটি এগিয়ে চলবে।
কিন্তু, প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ হয়নি। ঢাকার একটি স্বনামধন্য কলেজের একজন শিক্ষক গত রোববার আমাদের বার্তাকে বলেন, এবারের আবেদন প্রক্রিয়াকরণের সফটওয়ারে নতুন একটা পদ্ধতি যুক্ত করা হয়েছে। সেখানে লিঙ্গ বিষয়ক একটা মেন্যু রয়েছে। কিন্তু সেই অংশটা অকার্যকর দেখায়। ফলে পুরো প্রক্রিয়াটাই আটকে যায়।
কিছুক্ষণ পরে দেখি কর্তৃপক্ষই সার্ভারে ত্রুটি আছে বলে ঘোষণা দিয়েছে। নতুন করে বলা হয়েছে, সন্ধ্যা ছয়টায় আবেদন করা যাবে।
কিন্তু সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত, তারপর সকাল হলেও সার্ভারে ঢোকার চেষ্টা করলে ‘নট এভেইলএবল’ বার্তাটিই দেখা যাচ্ছিলো। তবে লিঙ্গ অপশনটি বাদ দেয়ার পর ভর্তিচ্ছুরা আবেদন করতে পারছেন। আগামী ১১ জুন অবধি এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা কেবল অনলাইনে (www.xiclassadmission.gov.bd) ভর্তির আবেদন করতে পারবেন। তিন ধাপে আবেদন নেয়া হবে৷
বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর কলেজগুলোতে ভর্তি ফি সর্বোচ্চ ৭৫০০, ইংরেজি মাধ্যমে ৮৫০০। ঢাকা বাদে অন্য মেট্রপলিটন এরিয়াতে ৫ হাজার, জেলা শহরে ৩ হাজার এবং উপজেলায় আড়াই হাজার টাকা। এটা সর্বোচ্চ ভর্তি ফি।
এবার কলেজগুলোতে ২৫ লাখ আসন থাকলেও পাস করেছেন ১৬ লাখ ৭২ হাজার জন। সে হিসেবে ৮ লাখের বেশি আসন খালি থাকবে। তবে ভালো কলেজগুলোতে ভর্তির প্রতিযোগিতা হবে।
উল্লেখ্য, চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে পাস করেছেন ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ জন। এক লাখ ৮২ হাজার ১৩২ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছেন। ৯টি সাধারণ, মাদরাসা ও কারিগরি বোর্ডে গড় পাসের হার ৮৩ দশমিক ০৪ শতাংশ।
দেশে মানসম্পন্ন ও ভালো কলেজ হিসেবে বিবেচিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দু’শতাধিক। এসব কলেজে আসন আছে এক লাখের কাছাকাছি। এগুলোতেই শিক্ষার্থীদের ভর্তির আগ্রহ বেশি থাকবে। তবে মেধাবী শিক্ষার্থীদের আগ্রহ থাকবে রাজধানীর দিকে। ঢাকায় মানসম্পন্ন কলেজের সংখ্যা ২৫ থেকে ৩০টি। এগুলোতে প্রতি বছর ভর্তিতে তীব্র প্রতিযোগিতা হয়। এবারো হবে।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।