বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার আবার টাকা চুরির ফন্দি বের করেছে, এরা নাকি পেনশন ভাতা দেবে। এরা জনগণের টাকা চুরি করার নতুন ফন্দি পেনশন স্কিম। সেই টাকা চুরি করে ভোট করবে এরা।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের গণতান্ত্রিক, ভোটের, কথা বলার, বাঁচার অধিকার দাও। তেল, ডালসহ নিত্যপণ্যের দাম কমাও। এটাই আমাদের দাবি। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছি ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য। ২৯ জুলাই আমাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে হায়েনার মত তারা আক্রমণ করেছে। গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে।’
শুক্রবার বিকেলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির গণমিছিল পূর্বসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দয়াগঞ্জ থেকে গণমিছিল শুরু হয়ে সায়েদাবাদ ব্রিজ, ধলপুর কমিউনিটি সেন্টার, গোলাপবাগ, কমলাপুর, বৌদ্ধমন্দির হয়ে খিলগাঁও এসে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। গণমিছিলে বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন।
আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কোনো দিকে পথ নেই, উত্তরে পর্বতমালা আর দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, কোন দিকে ওদের যাওয়ার আর পথ নেই। আর কোন সময় নাই। মানে মানে এখনই পদত্যাগ করো। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দাও, সংসদ বিলুপ্ত করো, নতুন নির্বাচন কমিশন করে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করো।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজ সারাদেশকে এই আওয়ামী লীগ কারাগারে পরিণত করেছে। কেন আটক করে? ভয়ে। ভয়ে আওয়ামী লীগের মুখ শুকিয়ে গেছে। শেখ হাসিনার এখন নতুন নতুন কাপড় পরা বন্ধ করে দিয়েছে। তারা যে টাকা পাচার করেছে তা নিয়ে চিন্তায় আছে। অবস্থা এখন আরও খারাপ। মার্কিন থেকে বাংলাদেশকে নিয়ে শুনানি দাবি করছে সে দেশের সংস্থাগুলো।’
ফখরুল আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ লুটপাট করে সব শেষ করে দিয়ে দেশকে ফোকলা করে দিয়েছে।এদেরকে না সরাতে পারলে দেশের অস্তিত্ব থাকবে না। জনগন উত্তাল আন্দোলনের মাধ্যমে এই অবৈধ সরকারকে সুনামির মতো নিশ্চিহ্ন করে দিবে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার সংবিধানের দোহায় দেয় কোন সংবিধান? বৈধ সংবিধান না এটা। আপনারা পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে জোড় করে ক্ষমতায় বসে আছেন। সরকারের অবস্থা এখন আরও খারাপ। বিশ্বের মানবাধিকার সংস্থাগুলো এখন বলছে, বাংলাদেশের উপর একটা শুনানি হোক। তারা সুষ্ঠ নির্বাচনে বাধা প্রদান করছে। ৯ জন এখন আর আমেরিকা যেতে পারে না। তাদের সম্পদ কি হবে তারা জানে না।’
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘একটি কথাই বলা যায়, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। তার অধীনে আমরা কোন নির্বাচনে যাব না। আমাদের অধিকার গণতান্ত্রিক অধিকার আমাদের উদ্ধার করে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ভারত যদি আবার ১৪ খ্রিষ্টাব্দের মতো শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে চায় চ্যালেঞ্জ এদেশের ১৮ কোটি জনগণ এবার ছাড়বে না।’
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সকালে মার্কিনদের গালি দেয়, বিকেলে আবার ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায়। যারা বাংলাদেশের গণতন্ত্রের পক্ষে তারাই আমাদের বন্ধু।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে গণমিছিলপূর্বক সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আনম সাইফুল ইসলাম প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন।