দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: স্বপ্ন ছিল রাজধানীতে নিজের একটি বাড়ি হবে। সে লক্ষ্যে নিজের সারাজীবনের সঞ্চয় দিয়ে জমি কিনতে বায়না করেন খিলগাঁওয়ের একটি কলেজের সাবেক শিক্ষক প্রদ্যুৎ কুমার ভট্টাচার্য্য (পলাশ মাস্টার)। কিন্তু এরপর ১ যুগেরও বেশি সময় পার হলেও এখনো তিনি জমি বুঝে পাননি। এমনকি বায়নার টাকা ফেরত চাওয়ায় তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।
জানা গেছে, ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে প্রদ্যুৎ কুমারের সঙ্গে পরিচয় হয় জমির দালাল ডেমরার মো. মিছির আলী ও যাত্রাবাড়ীর আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে। ওই বছর তাদের দেখানো ডেমরা থানাধীন বালুধিৎপুর মৌজার ৩৩৭৯ ও ৩৩৮০ নম্বর দাগের মোট ২৪ শতাংশ জমি কিনতে ১ কোটি টাকার বায়না করেন প্রদ্যুৎ কুমার। কিন্তু জমি না দিয়ে দালালরা টালবাহানা করতে থাকে। এরপর টাকা ফেরত চাইলে তারা বলে, আমরা আওয়ামী লীগ নেতা এবং ঢাকা-৫ আসনের সাবেক এমপি কাজী মনিরুল ইসলাম মনুর লোক। বেশি বাড়াবাড়ি করলে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার হুমকিও দেয় তারা। এর পরও টাকা চাওয়ায় মিছির আলী ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ২০ নভেম্বর প্রদ্যুৎ কুমারের বিরুদ্ধে বাড়ি পোড়ানোর মামলা দেয়। মামলাটি তদন্ত করে পিবিআই। তদন্ত প্রতিবেদনে তারা জানায়, মিছির আলীর অভিযোগ মিথ্যা। এরপর হয়রানির ঘটনায় প্রদ্যুৎ কুমার ডেমরা থানায় অভিযোগ দেন।
বছরখানেক আগে বিষয়টি ঢাকা-৫ আসনের সাবেক এমপি কাজী মনিরুল ইসলাম মনুকে অবহিত করা হয়। তিনি মিছির আলী এবং আনোয়ার হোসেনকে ডেকে দ্রুত টাকা ফেরত দেয়ার আদেশ দেন। তিনি তার ভাই আতিকুর রহমানকে দায়িত্ব দেন টাকা বুঝে নিয়ে সেগুলো প্রদ্যুৎ কুমারকে ফিরিয়ে দেয়ার। কিন্তু আতিকুরও টাকা আদায় করতে ব্যর্থ হন। এরপর তিনি প্রদ্যুৎ কুমারকে মামলা করার পরামর্শ দেন এবং নিজেও বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করেন।
এ বিষয়ে মো. মিছির আলী ও মো. আনোয়ার হোসেনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাদের পাওয়া যায়নি। ফোনে খুদেবার্তা পাঠালেও তারা কোনো উত্তর দেয়নি। তাদের বাড়িতে গিয়েও কাউকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে ডেমরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) সুব্রত কুমার পোদ্দার বলেন, প্রদ্যুৎ কুমার আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। আমি বেশ কয়েকবার মিছির আলী ও আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাদের থানায় এসে বিষয়টি সমাধানের জন্য বলেছিলাম। কিন্তু তারা আসেনি। তাই আমি প্রদ্যুৎ কুমার ও তার পরিবারকে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।