চলতি মাসের শুরুতে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন রেখেছে জাতিসংঘ। গতকাল বৃহস্পতিবার এ শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠানে ইব্রাহিম রাইসির ওপর বক্তব্য দেওয়ার কথা বিভিন্ন দেশের নেতাদের। সাধারণত ১৯৩ সদস্যবিশিষ্ট জাতিসংঘ যখন কোনো দেশের বর্তমান রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধান মারা যান, তখন তার প্রতি সম্মান জানিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এ অনুষ্ঠান বয়কট করতে চায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, আমরা কোনোভাবেই এ আয়োজনে অংশ নেব না। জাতিসংঘের উচিত ইরানের জনগণের পাশে দাঁড়ানো, তাদের ওপর কয়েক দশক ধরে নিপীড়ন চালানো নিপীড়কের স্মৃতিচারণ করা নয়। রাইসি ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে হাজার হাজার রাজনৈতিক বন্দির বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ অসংখ্য ভয়ঙ্কর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। মানবাধিকারের কিছু ভয়াবহ এবং সবচেয়ে খারাপ রেকর্ড তার আমলে ঘটেছে। এর মধ্যে ইরানি নারীদের বিরুদ্ধে মানবাধিকারের ভয়াবহ লঙ্ঘন তার আমলে ঘটেছে।
এর আগে এ ধরনের অনুষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রের বর্জন করার কোনো খবর জানা যায়নি। নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ইরানি মিশন এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। কট্টরপন্থি রাইসিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে বিবেচনা করা হতো। গত ১৯ মে দেশটির আজারবাইজান সীমান্তের কাছে পার্বত্য এলাকায় তাকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়।
এর আগে রাইসির মৃত্যুর একদিন পর ২০ মে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সময় এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় তার স্মরণে। সেই সময় জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট উড অনিচ্ছা সত্ত্বেও উঠে দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করেন। ২০ মে রাইসির মৃত্যুতে আনুষ্ঠানিকভাবে শোকও জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তখন ইরানের প্রতি সমবেদনা জানানোর কারণে রিপাবলিকান সদস্যরা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের কঠোর সমালোচনা করেছিলেন।