মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণে ‘যৌক্তিকতা’ খতিয়ে দেখতে ও ‘অভিন্ন সুপারিশমালা প্রণয়নে’ একটি আবাসিক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুরের ব্র্যাক সিডিএমে এ কর্মশালা শুরু হয়। আগামীকাল শুক্রবার এ কর্মশালা শেষ হবে। বেশ কয়েকটি শিক্ষক সংগঠনের নেতারা এ কর্মশালায় অংশ নিচ্ছেন। তবে, মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের সংগঠন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) কোনো নেতা এতে অংশ নেননি। অংশ নেয়া নেতাদের ব্যক্তিগত ও সংগঠনিক দুর্বলতাসহ নানা বিষয়ে ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে লেখালেখি হচ্ছে। কেউ কেউ ফেসবুকভিত্তিক সংগঠন বলেছেন। খোদ বিটিএ নেতা শেখ কাওছার আহমেদও মন্তব্য করেছেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়ের রাতে সাংবাদিকদের জানান, কর্মশালায় বাংলাদেশ অধ্যক্ষ পরিষদের একাংশ, বাংলাদেশ কারিগরি কলেজ শিক্ষক সমিতির একাংশ স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ, বাংলাদেশ মাদরাসা জেনারেল টিচার্স এসোসিয়েশন এর একাংশ, বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদ, বদলি প্রত্যাশী এমপিওভুক্ত ইনডেক্সধারী শিক্ষক কমিটি, বাংলাদেশ মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির একাংশ, শিক্ষক সমিতি কর্মচারী ফেডারেশন, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (কামরুজ্জামান), বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী ফোরাম, বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষক-কর্মচারী ফোরাম, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদারেছীন, বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের নেতারা অংশগ্রহণ করছেন বলে দাবি করা হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শিক্ষামন্ত্রী মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের বিষয়ে দুইটি কমিটি গঠনের নির্দেশনা দিয়েছেন। এ কমিটির কার্যপরিধি নির্ধারণের লক্ষ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ২৭ ও ২৮ জুলাই ব্র্যাক সিডিএমে দুই দিনব্যাপী একটি আবাসিক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কর্মশালায় বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনের নেতারা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাসহ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর ও মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে কর্মশালার উদ্বোধন করেন।
এসময় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জাতীয়করণ একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং সরকার এ বিষয়ে কাজ করছে। জাতীয়করণ বিষয়ের যৌক্তিকতা, শিক্ষায় বিদ্যমান বিভিন্ন শ্রেণি-ক্যাটাগরির শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সমন্বয়, কার্যকর নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশমালা তৈরি এবং মাধ্যমিক শিক্ষার জাতীয়করণের বিষয়ে সম্ভাব্য আর্থিক সংশ্লেষ এবং সরকারের সার্বিক সক্ষমতা যাচাই করে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় উচ্চ পর্যায়ের দুইটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। তবুও শিক্ষকদের একটি অংশ আন্দোলনের নামে শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ করে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি সাধন করছেন, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তিনি কর্মশালার মাধ্যমে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের বিষয়ে প্রস্তাবিত দুইটি কমিটির কার্যপরিধির একটি রূপরেখা বেরিয়ে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুকবার কর্মশালা শেষে শিক্ষক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের বিষয়ে প্রস্তাবিত দুইটি কমিটির কার্যপরিধির রূপরেখার একটি খসড়া প্রস্তাবনা শিক্ষামন্ত্রীর কাছে পেশ করা হবে।