গাজীপুরের কালিয়াকৈরে কারাগার থেকে প্যারোলে মুক্তি পাওয়া বিএনপির নেতা মো. আলী আজমের ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় মায়ের জানাজায় অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আমি বিষয়টি চেক করেছি, গাজীপুরের পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়া পরানো জেল প্রশাসনের কাজ, সেটি পুলিশের অধীনে নয়, আইজি প্রিজনের অধীনে। যেহেতু কয়েকদিন আগে কয়েকজন জঙ্গি পালিয়ে গেছে, এ জন্য তারা অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করেছে। এবং পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি জানতেন না। যারা সেই বিএনপি নেতাকে বহন করে এনেছিল শুধু তারাই জানতেন। তবে আমি মনে করি, জানাজার সময় তার ডান্ডাবেড়ি এবং হাতকড়া খুলে দিলে ভালো হতো।’
আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপির ২৭ দফা আসলে জনগণের সাথে ভাঁওতাবাজি এবং রাষ্ট্রের নয়, বিএনপিরই মেরামত দরকার কারণ তারা গত ১৪ বছর ধরে যেভাবে জনগণের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে, জনগণকে জিম্মি করার রাজনীতি করেছে, রাজনীতির নামে মানুষ হত্যা করেছে, জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, এ ধরনের রাজনৈতিক দল যখন রাষ্ট্র সম্পর্কে মেরামতের কথা বলে তখন মানুষ স্বাভাবিকভাবে আতংকিত হয়।’
ড. হাছান মাহমুদ আরও বলেন, “বিএনপির ২৭ দফার অনেক কিছু তারা যে নীতি নিয়ে চলছে, সেটির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। একদিকে যেমন তারা যে সব মৌলবাদী দলগুলোর সঙ্গে জোট করেছে, তাদের কারও কারও মূল মতাদর্শ হচ্ছে বাংলাদেশকে ধর্মরাষ্ট্র আফগানিস্তানের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া, আবার অন্য দিকে বিএনপি দফা দিয়েছে ‘ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার’ অর্থাৎ তাদের কথা ও কাজে এটা প্রচন্ড সাংঘর্ষিক।”
‘বিএনপির এই ২৭ দফা আসলে জনগণের সাথে ভাঁওতাবাজি’ উল্লেখ করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের ২৭ দফার ১৩ দফায় বলা আছে, দুর্নীতির ব্যাপারে কোনো আপোষ করা হবে না। দুর্মুখেরা বলছে, এটি দিয়ে বিএনপি আসলে বোঝাতে চেয়েছে- দুর্নীতি তারা আগের মতোই অব্যাহত রাখবেন। কারণ যারা দেশকে পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছে, যারা হাওয়া ভবন তৈরি করে সমান্তরাল সরকার পরিচালনা করে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিল, তারা যখন দুর্নীতির ব্যাপারে কোনো আপোষ হবে না বলে তখন তারা আগের সেই দুর্নীতির পথেই হাঁটবে সেটিই বোঝায়।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাষ্ট্র মেরামত কেন বলা হলো! এভাবে দফাগুলোর নাম দেওয়া ঠিক নয়। এটি কি কারখানা যে মেরামত করতে হবে! আসলে বিএনপিরই মেরামত দরকার। আর যাদের মস্তিষ্ক থেকে এগুলো আসছে, তাদের মস্তিষ্করও মেরামত দরকার।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতে আবারও বিএনপির অংশগ্রহণের ওপর জোর দিয়েছেন -এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘অবশ্যই নির্বাচন কমিশনের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে সব দলকে নির্বাচনমুখী করা। আমরাও চাই বিএনপিসহ সমস্ত রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। একটি প্রতিযোগিতামূলক সুষ্ঠু, স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হোক, সেটি আমরা চাই। বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি করবে না, সেটি একান্তই তাদের নিজস্ব ব্যাপার।’
‘তবে কথায় আছে না- গাধা জল ঘোলা করে খায়’ উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি যেমন ১০ তারিখে নয়াপল্টনের অফিসের সামনে থেকে নড়বেন না বলে পরে গরুর হাটের ময়দানে গিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বিএনপি তাদের দল টিকিয়ে রাখার স্বার্থে নির্বাচনে আসবে।’