জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যদের জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগের আহ্বান জানানো হয়েছে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ থেকে। সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান বলেন, আমাদের সাতজন এমপি পদত্যাগ করেছেন। জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যদের বলব, আপনারাও পদত্যাগ করুন, পদত্যাগ করে জনগণের কাতারে চলে আসুন।
আজ (শনিবার) দুপুরে ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করছেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। সমাবেশ সঞ্চালনা করছেন ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক ও রফিকুল আলম মজনু।
অন্যান্য বিভাগীয় সমাবেশের মতোই ঢাকার গণসমাবেশেও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সম্মানে দুটি চেয়ার ফাঁকা রাখা হয়েছে।
অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান বলেন, আগামী নির্বাচনে ভোট হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। শেখ হাসিনা ও তার সরকারের পদত্যাগের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হবে। সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে বিএনপি সরকার গঠন করবে।
তিনি বলেন, মাঠে যে লোক দেখেছেন তার বাইরে আরও ১০ গুণ মানুষ রাস্তায় রয়েছে। আমাদের এমপিরা তাদের সামনে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছে। আমি বলতে চাই, এটি ১০ নম্বর সমাবেশ না, ১০ নম্বর সতর্কতা সংকেত। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে।
সমাবেশে মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস অভিযোগ করেন প্রতিদিন আওয়ামী লীগের ৫-১০ জন নেতা-কর্মী দুই-চারশ পুলিশ নিয়ে তার শাহজানপুরের বাড়ির সামনে ঘোরে। ছাত্রলীগ-যুবলীগের দুই-চারজন গুন্ডা আমাদের বাড়ির সামনে গিয়ে মিছিল করে, ‘মির্জা আব্বাসের চামড়া তুলে নেবো আমরা, তারেক রহমানের চামড়া, তুলে নেবো আমরা।’
তিনি বলেন, আমি বলতে চাই এত সাহস যদি থাকে, পুলিশ রেখে আসেন দেখাবো কে কার চামড়া তুলে নেয়। প্রতিটি ঘরে ঘরে মির্জা আব্বাস, জিয়াউর রহমান, তারেক রহমান রয়েছে।
বেলা ১১টায় সমাবেশ শুরুর কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের কিছু আগে গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশ শুরু করে বিএনপি। সমাবেশ ঘিরে গোটা রাজধানীতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। নিরাপত্তা বিধানে শুধু পুলিশের পক্ষ থেকে ৩৪ হাজার জনবল মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) এ কে এম হাফিজ আক্তার।
এছাড়া সমাবেশ ঘিরে মাঠে সরব রয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও। সকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, আজ আওয়ামী লীগের হাজার হাজার কর্মী পাহারাদার হিসেবে কাজ করছে। বিকেল পর্যন্ত দুষ্টু লোকদের সভা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকব।
উল্লেখ্য, এতদিন বিএনপির সভা সমাবেশগুলোতে দলটির মাঠের নেতা মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দিতেন। কিন্তু গেল বুধবারের বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনায় বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।