জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২২-২৩ সেশনে ভর্তি হওয়া প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের আগামী ৩০ নভেম্বর থেকে অনলাইনে ক্লাস নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে সঞ্চালনা করেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি রায়। তিনি বলেন, ‘নিয়োগ বাণিজ্যের কারণে নতুন হল চালু করতে দেরি হচ্ছে।’
মানববন্ধনে ছাত্র ফ্রন্টের সদস্য শারমিন আক্তার বলেন, ‘হরতাল অবরোধের সময় শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ক্লাসের আবেদন করলেও তা নেয়া হয়নি। শিক্ষার্থীদের অনেক কষ্ট করে অফলাইন ক্লাস করতে হয়েছে। আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে পরিচিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস কেন অনলাইনে হবে? উইকেন্ডের শিক্ষার্থীরা যদি অফলাইনে ক্লাস করতে পারে, তাহলে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা কেন অনলাইনে ক্লাস করবে।’
জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ ইসলাম মেঘ বলেন, ‘বাংলায় একটা প্রবাদ আছে বৌকে না পেয়ে ঝি কে পেটায়। বর্তমানে আমাদের প্রশাসন ঠিক সেই কাজটি করছে। হলগুলোতে অসংখ্য অছাত্র নির্দ্বিধায় অবস্থান করছে। তাদের বের করার জন্য প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা একটি স্বপ্ন নিয়ে এই আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিল, অনলাইনে ক্লাস নেয়ার মাধ্যমে তাদের সেই স্বপ্ন ভেঙে দেয়া হচ্ছে।’
ছাত্র ইউনিয়নের জাবি সংসদের আহ্বায়ক আলিফ মাহমুদ বলেন, ‘অল্প কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী ছয়টি হল উদ্বোধন করেছে। এরপরও প্রশাসন যখন অনলাইনে ক্লাস নেয়ার ঘোষণা দেয়, তা হাস্যকর। একাডেমিক কাউন্সিল ছাড়াই তারা অনলাইনে ক্লাস নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই প্রশাসন কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অনলাইন ক্লাস নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৮ জুন থেকে ২২ জুন পর্যন্ত ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের (৫২ ব্যাচ) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তবে দীর্ঘ পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও আবাসন সংকটসহ বিভিন্ন কারণে সশরীরে নবীন শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অবশেষে গত ২১ নভেম্বর (মঙ্গলবার) অনলাইনে ক্লাস নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।