জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) দুই শিক্ষার্থীকে আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবি, নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তা ও ছিনতাইয়ের চেষ্টাকালে দুই বহিরাগতকে পুলিশে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল মঙ্গলবার (২৫ জুন) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল সংলগ্ন মনপুরা এলাকার প্রবেশ পথে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় আটকরা হলেন- নাজমুল হাসান (৩২) ও মো. আল-আমিন (২৮)। নাজমুল সাভারের লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (বিপিএটিসি) চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। তিনি পটুয়াখালীর কলাপাড়া থানার খলিলপুর গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা। আল-আমিন একই প্রতিষ্ঠানে উন্নয়ন প্রকল্পে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কর্মরত। তার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ থানায়।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী রুহুল আমিন ও তার বান্ধবী সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনের পাশ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মনপুরা এলাকার দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় তিনজন ছিনতাইকারী তাদের পথরোধ করে দাঁড়ায়। তারা সাথে সাথে ভুক্তভোগীদের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় ও তাদের কাছে ২০ লাখ টাকা দাবি করে। অন্যথায় নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তা ও মেরে ফেলার হুমকি দেয়। প্রায় তিন ঘণ্টা আটকে রাখার পর রুহুল আমিন টাকা আনার কথা বলে সুকৌশলে বন্ধুদের ফোন করেন।
এ সময় সালাম বরকত হল থেকে শিক্ষার্থীরা গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা এ সময় ছিনতাইকারীদের বেধড়ক মারধর করেন। অভিযুক্তদের একজন পালিয়ে গেলেও দুজনকে হাতেনাতে ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার কর্মকর্তাদের কাছে তুলে দেন শিক্ষার্থীরা। পরে রাত পৌনে ১টার দিকে আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক নুর আলম মিয়া অভিযুক্ত, ভুক্তভোগী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে আশুলিয়া থানায় যান। এ ঘটনায় ধর্ষণচেষ্টার মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই নারী শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমগীর কবির বলেন, আমি নিরাপত্তা অফিসকে সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি জানিয়েছি। ঘটনাটি যেহেতু বহিরাগতদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সেহেতু নিরাপত্তা অফিস বিষয়টি দেখভাল করবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (নিরাপত্তা ২) মো. জেফরুল হাসান চৌধুরী সজল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মহোদয়ের অনুমতি সাপেক্ষে অভিযুক্তদের পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছি। আমরা চেষ্টা করেছি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মামলা দেওয়ার জন্য। কিন্তু ভুক্তভোগী চাচ্ছে ধর্ষণচেষ্টার মামলা করতে। এ ধরনের অভিযোগের মামলা ভিকটিমকেই দিতে হয় বিধায় আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মামলা করিনি।