দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছুসংখ্যক শিক্ষক-শিক্ষার্থী কর্তৃক প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগানো এবং অবরোধ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে সংশ্লিষ্ট সকলের জ্ঞাতার্থে জানানো যাচ্ছে যে, প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে অবরোধ করার ফলে প্রশাসনিক সব ধরনের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। অবরোধের ফলে প্রশাসনিক ভবনের সকল অফিস ও শাখার প্রয়োজনীয় কাজ বন্ধ রয়েছে। অবরোধের ফলে ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচি সংক্রান্ত সভা করা যাচ্ছে না।
পবিত্র রমজান মাসে আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে হিসাবাধ্যক্ষ অফিসে জরুরি কাজ থাকা সত্ত্বেও সেসব জরুরি কাজকর্ম করা সম্ভব হচ্ছে না। অনিদির্ষ্টকালের জন্য প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে দিয়ে প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে রাখা উদ্বেগজনক। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মনে করেন, এটি সুষ্ঠু ধারার গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ও পরিপন্থী।
আন্দোলনরত মঞ্চ যেসব দাবিতে আন্দোলন করছে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেসব বিষয়ে ওয়াকিবহাল এবং বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সেসব বিষয়ে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছে এবং তদানুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। মীর মশাররফ হোসেন হল সংলগ্ন এলাকায় সংঘটিত ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশের ভিত্তিতে ঘটনায় জড়িত শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিরতরে বহিস্কার এবং তাদের শিক্ষা সনদ বাতিল করা হয়েছে। অপরাধীদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের নামে মামলাও দায়ের করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে মাদক রোধে সংশ্লিষ্ট অফিসগুলোতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং মাদকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওঠা যৌন নিপীড়নের অভিযোগ যথাযথ কমিটি কর্তৃক তদন্তের পর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাওয়ায় তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে তার নাম প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং তিনি ইতোমধ্যে ক্যাম্পাসের বাসা ছেড়ে চলে গেছেন।
আবাসিক হলগুলোতে শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। দু’টি ছাত্র হলে সংঘটিত ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ছাত্রত্ব শেষ হওয়া, অনিয়মিত এবং মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের আগামী ১৭ এপ্রিলের মধ্যে হল ত্যাগ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অন্যথায় তাদের শিক্ষা সনদ বাতিল এবং তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় আইনে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আরো জানাচ্ছেন যে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সুষ্ঠু ধারার গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু আন্দোলনরত মঞ্চ গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির নামে প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। জাতির আলোর দিশারী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের আন্দোলন অপ্রত্যাশিত এবং অগ্রহণযোগ্য। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মনে করেন, যে কোনো পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আন্দোলন বা দাবি আদায়ের নামে প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগানো, অফিসে প্রবেশ করতে না দেয়া ইত্যাদি কর্মসূচি থেকে আন্দোলনরত পক্ষগুলোকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক এবং শিক্ষাকার্যক্রম গতিশীল রাখতে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছেন।