দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মুহাম্মদ তারেক চৌধুরীর বিরুদ্ধে গবেষণায় জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে তদন্তের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সচিব ও রেজিস্ট্রার আবু হাসান।
তারেক চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ—অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতির শর্তপূরণে তাঁর জমা দেওয়া গবেষণা প্রবন্ধে এমন মাত্রায় ও এমনভাবে অন্যের লেখা ব্যবহার করা হয়েছে, যা চৌর্যবৃত্তির পর্যায়ে পড়ে।
তাঁর বিরুদ্ধে জালিয়াতি করে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি নেওয়ার অভিযোগটি করেছেন একই বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ। গত বছরের ২৩ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের কাছে তিনি অভিযোগ জমা দেন।
অভিযোগে বলা হয়, ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে দর্শন বিভাগের একাডেমিক জার্নাল কপুলা থেকে ‘ঈশ্বরের স্বরূপ প্রসঙ্গে ধর্মীয় ও দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি: একটি তুলনামূলক পর্যালোচনা’ শীর্ষক একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করেন অধ্যাপক মুহাম্মদ তারেক চৌধুরী। ওই প্রবন্ধটিতে তিনি অধ্যাপক ড. আমিনুল ইসলামের পাশ্চাত্য দর্শনের ইতিহাস ‘থেলিস থেকে হিউম’ গ্রন্থের বিভিন্ন পৃষ্ঠা থেকে ১ হাজার ৩৪৩ শব্দ জালিয়াতি করেছেন, যা তাঁর মূল প্রবন্ধের প্রায় ১৯ শতাংশ। যেখানে নিয়মানুযায়ী একটি গ্রন্থ থেকে মাত্র ২ শতাংশ নেওয়া যায়। অথচ তারেক চৌধুরী এ গবেষণা প্রবন্ধটি ব্যবহার করে বিভাগের অধ্যাপক পদে পদোন্নতি লাভ করেন।
গত বছরের ১৮ এপ্রিল প্রাথমিক অভিযোগ নিয়ে সিন্ডিকেটের বিশেষ সভা হয়। সেই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অধ্যাপক ফরিদ গত বছরের ২৩ জুলাই তথ্যপ্রমাণসহ অভিযোগপত্র জমা দেন। আট মাসের বেশি সময় পর অভিযোগটি নিয়ে ১ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের বিশেষ সভা হয়।
জানতে চাইলে গতকাল বৃহস্পতিবার রেজিস্ট্রার আবু হাসান বলেন, সিন্ডিকেটের সভায় অভিযোগের তদন্ত করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কমিটির সদস্য কারা হতে পারেন, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে; কিন্তু কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
রেজিস্ট্রার কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি জানালেও এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে সিন্ডিকেট সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত এক শিক্ষক জানিয়েছেন। তবে তিনি কমিটির সদস্যদের নাম মনে করতে পারেননি।
তবে সিন্ডিকেটসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক সুফি মোস্তাফিজুর রহমানকে সভাপতি করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. সুফি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমাকে তদন্ত কমিটির সভাপতি করা হয়েছে, তা আরেক সাংবাদিকের কাছে শুনলাম। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।’