পাবলিক পরীক্ষার বিধি অনুযায়ী বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন বা প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা দিতে কিছু বিশেষ সুবিধা পান। পরীক্ষা দেয়ার সময় অনুমতিসাপেক্ষে তাদের অভিভাবকরা কেন্দ্রে অবস্থান করতে পারেন। বিশেষ সহায়তায় পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দেয়া হয়। পান অতিরিক্ত সময়। শিক্ষা প্রশাসন বলছে, এসব সুবিধা পাওয়া প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের অধিকার। তবুও দেশের বিভিন্ন স্থানের বেশ কয়েকটি স্কুল এসএসসি পরীক্ষায় এসব সুবিধা দেয়ার নামে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জিম্মি করে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছে। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থী প্রতি বিশেষ সুবিধার নামে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা আদায় করছে অনেক স্কুল।
অবৈধভাবে এই ফি আদায়ের ফলে বিপাকে পড়েছেন অভিভাবকরা। তারা অভিযোগ জানালেও স্কুলের নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়েছেন। ফি আদায়ের প্রকাশ্য প্রতিবাদ করলে প্রতিবন্ধী সন্তানের পরীক্ষা তথা ভবিষ্যৎ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে ভয় পাচ্ছেন তারা। এদিকে শিক্ষা প্রশাসনের কর্তারা বলছেন, এভাবে ফি আদায় করার এখতিয়ার স্কুলগুলোর নেই।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার এক অভিভাবক গতকাল শনিবার দুপুরে দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানান, তার বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন সন্তান ওই এলাকার একটি স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। বিধি অনুযায়ী তিনি কিছু বিশেষ সুবিধা পাবেন। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ এজন্য তিন হাজার টাকা আদায় করেছে। তিনি বোর্ডে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছেন, এ ধরনের কোনো ফি নির্ধারিত নেই।
জানা গেছে, বিধি অনুযায়ী এসএসসি পরীক্ষা দিতে অতিরিক্ত সময় পাবেন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীরা। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পালসিজনিত প্রতিবন্ধকতা ও হাত না থাকা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীরা শ্রুতি লেখক সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এ ধরনের পরীক্ষার্থীদের ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। অটিস্টিক, ডাউন সিনড্রোম, সেরিব্রাল পালসিতে ভোগা পরীক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময় বৃদ্ধিসহ শিক্ষক, অভিভাবক, সাহায্যকারীর বিশেষ সহায়তায় পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ পান।
আজ রোববার শুরু হচ্ছে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা। চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ২০ লাখ ৭২ হাজার পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন। তবে কতজন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন সে সংখ্যা শিক্ষা বোর্ডগুলোর কাছে নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মো. আবুল বাশার গতকাল দুপুরে দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় যেসব বিশেষ সুবিধা পান তা তাদের অধিকার। এসব সুবিধার জন্য বোর্ড কোনো ফি আদায় করে না। এর নামে ফি আদায় করার এখতিয়ারও স্কুলের নেই। যারা অতিরিক্ত ফি নিচ্ছেন তারা অবৈধভাবে নিচ্ছেন। কেউ সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।