বর্তমান বাজারে এমনিতেই চাকরি পাওয়া কঠিন। কোনোরকমে একটি চাকরি পেলেও বস যদি খিটখিটে ও রগচটা হয়, তাহলে বিষয়টি একটি কর্মীর জন্য আরও খারাপ পরিস্থিতি ডেকে আনতে পারে। তখন ক্যারিয়ারের ক্ষতির ভয়ে হয়তো আপনি কিছু বলতেও পারবেন না। তো এমন পরিস্থিতিতে কী করা উচিত? চাকরি ছেড়ে দেওয়া তো আর সব সময় সম্ভব নয়।
মার্কিন গবেষণা সংস্থা হ্যারিস পোলের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ৭১ শতাংশ আমেরিকানই তাদের ক্যারিয়ারে একজন বিরক্তিকর বসের দেখা পেয়েছেন। বিরক্তিকর বসের কারণে মানসিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে। হ্যারিস পোলের জরিপ বলছে, বিরক্তিকর বস রয়েছে এমন ৭৪ শতাংশ কর্মী ছুটির দিনেও উদ্বেগে থাকেন।
এমন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অন্যদের স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর বটে। বিভিন্ন মার্কিন গবেষণা বলছে, অসংবেদনশীল বসের চাপে থাকা কর্মীরা মানসিক চাপ, বিষণ্নতা ও উদ্বেগে ভুগে থাকেন। আবার তিতিবিরক্ত হয়ে চাকরি ছেড়ে দিলেও রক্ষে নেই। গবেষকেরা বলছেন, আগের মানসিক চাপ থেকে পুরোপুরি মুক্ত হতে নাকি ২২ মাস পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে!
এবার আসা যাক বসকে সামলানোর উপায়ে। এ ক্ষেত্রে কিছু কৌশল অবলম্বন করা যেতে পারে। এগুলো হলো:
১. আপনার বস রগচটা বা খিটখিটে হলে তাঁর বাজে আচরণের কারণ খোঁজার চেষ্টা করুন। সেইসঙ্গে নিজের ত্রুটিও খোঁজার চেষ্টা করুন। যদি নিজের কোনো ভুল পান তাহলে, আগে নিজেকে শোধরান।
২. বসের আচরণ যেমনই হোক, পেশাদার আচরণ বজায় রাখুন। কথোপকথনের সময় কিংবা কর্মক্ষেত্রে কখনোই আবেগের বশবর্তী হয়ে কোনো কাজ অথবা কথা বলবেন না। এতে করে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হবে। বসের বাজে ব্যবহার অনেকে স্বাভাবিকভাবে নিলেও আপনারটা নেবে না। তাই যতটা সম্ভব মার্জিত আচরণ করার চেষ্টা করুন।
৩. মনে রাখবেন, আপনার বসকে আপনার থেকেও কঠিন এবং জটিল অবস্থা সামলাতে হয় নিয়মিত। নিয়মিতই তাঁর ওপর বাড়তি অনেক ধরনের চাপ থাকে। তাঁদের আচরণে পড়তে পারে সেই চাপের প্রভাব। তাই তাঁদের দৃষ্টিকোণ থেকে ভাবার চেষ্টা করুন। তাতে হয়তো তাঁদের কড়া ব্যবহার অনেকটাই যুক্তিসংগত লাগবে।
৪. বস রেগে আছেন তা বুঝতে দিন তাঁকে। হয়তো যৌক্তিক কারণেই আপনার বস রাগ দেখাচ্ছেন আপনার ওপর। এক্ষেত্রে অনেক বস অতিমাত্রায় রাগ প্রকাশ করেন, যা তার বডি ল্যাংঙ্গুয়েজে প্রকাশ পায়। সে ক্ষেত্রে বসকে বুঝতে দিন যে আপনি বুঝতে পারছেন তিনি খুব রেগে আছেন। এতে এক পর্যায়ে তার রাগ কমতে পারে।
৫. খারাপ সময়ে সবারই উপযুক্ত সমর্থন প্রয়োজন হয়। তাই বাজে বসের কারণে চাপে থাকলে, মানসিকভাবে ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করুন। বন্ধু ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটান পাশাপাশি অফিসে সহকর্মীদের সঙ্গে নেটওয়ার্ক গড়ে তুললে যে কোনো খারাপ পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সহজ হবে।
তথ্যসূত্র: হ্যারিস পোল, ফোর্বস, হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ ও দ্য মুজে