বরগুনায় দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে তিন শতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিকল্প ভবনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে এসব স্কুলে পাঠদান চলছে। যেকোনো দুর্ঘটনার আশঙ্কায় আতঙ্কে আছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। ফলে বিদ্যালয়গুলোতে দিন দিন কমছে শিক্ষার্থীর সংখ্যাও।
বরগুনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, বরগুনায় মোট ৭৯৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। এরমধ্যে পাঠদান অনুপযোগী হয়ে পড়েছে ৩২৩টি স্কুলের ভবন। এসব স্কুলের মধ্যে বরগুনা সদর উপজেলায় আছে ১০৪টি, পাথরঘাটায় ৭৫টি, আমতলীতে ৬৭টি, তালতলীতে ৪৭টি, বেতাগীতে ২১টি এবং বামনায় ৯টি।
বরগুনার পৌর শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কোরক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে দেখা যায়, ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত স্কুলটির ভবনে নেই দরজা, জানালা। ছাদ এবং দেওয়াল থেকে পলেস্তারা খসে খসে পড়ছে। যেকোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। আধাপাকা একটি টিনের ঘরে ক্লাস চললেও পর্যাপ্ত জায়গার অভাবে দু-একটি শ্রেণির পাঠদান ঝুঁকিপূর্ণ ওই ভবনেই নেওয়া হয়। শিক্ষকরাও বসেন ওই ভবনে।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা খোকন মোল্লা বলেন, আমি এ স্কুলের জমিদাতার ছেলে। ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দে একবার সংস্কার হয়েছিল ভবনটি। বর্তমানে ভবনটি জরাজীর্ণ হলেও বিকল্প জায়গা না থাকায় এ ভবনে পাঠদান করাচ্ছেন শিক্ষকরা।
স্কুলের সাবেক ছাত্র মো. সজিব বলেন, এলাকার মধ্যে কাছাকাছি অন্য স্কুল না থাকায় এক প্রকার বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে এখানে আসছেন ছেলে মেয়েরা। তিনি আরও বলেন ঝুঁকি এড়াতে স্কুলটিকে সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত ঘোষণা করা দরকার।
কোরক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রাকিবুল হাসান বলেন, আমরা প্রতিদিন স্কুলে আসার পর আতঙ্কিত থাকি। যেভাবে ভবনটির পলেস্তরা খসে পড়ছে তাতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। অভিভাবকরা সন্তানদের নিরাপত্তার কথা ভেবে দূরের স্কুলে ভর্তি করছেন। এতে আমাদের স্কুলের শিক্ষার্থী সংখ্যা দিন দিন কমছে।
বরগুনা সদর উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, বরগুনা সদর উপজেলার ১৬টি স্কুলের টেন্ডার হয়েছে। এরমধ্যে আটটি স্কুলের কাজ শুরু করতে ঠিকাদারকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকিগুলোর কাজও দ্রুত শুরু হবে।
তিনি আরও বলেন, সংস্কারের জন্য বরগুনায় পরিত্যক্ত স্কুল ভবনের তালিকা করে শিক্ষা অফিসে জমা দিয়েছি। তারা দ্রুত ঝুঁকিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত ভবন সংস্কারে পদক্ষেপ নেবে।