নিকলীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই চলেছে পাঠদান। গত বুধবার দুপুরে ছাদের বিমের বড় অংশ ধসে মেঝেতে পড়ে যায়। এ সময়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা স্কুলের সামনে মাঠে পিটিতে অবস্থান করায় শারীরিকভাবে দুর্ঘটনার কবলে থেকে বেঁচে যায়। এ ঘটনার পরে ভয়ে স্কুল ছেড়ে শিক্ষার্থীরা বাড়ি চলে যায়। সরেজমিন গিয়ে দেখা মিলে বৃহস্পতিবারে উপস্থিতি অতি নগণ্য।
কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার জারইতলা ইউনিয়নের বনমালীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দে স্থাপিত হয়। ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দে ভবন নির্মাণ হলেও দীর্ঘদিন ধরেই ছাদ দিয়ে পানি পড়ছিল। কয়েক দফায় ছোট পরিসরে মেরামতও করা হয়। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে এক লাখ টাকা দিয়ে জলছাদও দেয়া হয়। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা থেকে মুক্তি পায়নি বিদ্যালয়টি।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নীলিমা আক্তার জানান, চার বছরেরও বেশি সময় ধরে আইএমইএমআইএস বরাবরে ঝুঁকিপূর্ণ বিল্ডিং হিসেবে লিখিত অভিযোগ জানানো হচ্ছে। কিন্তু এখনো কোনো টেন্ডার হয়নি। বিদ্যালয়টির জায়গা সংক্রান্ত জটিলতাও রয়েছে দীর্ঘদিন থেকেই। তবে ম্যানেজিং কমিটির ভাষ্য অচিরেই জায়গার জটিলতা নিরসন হয়ে যাবে।
বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অভিযোগ বৃষ্টির সময়ে ছাদের পানি ওয়াল গড়িয়ে মেঝেতে এসে পড়ে। রুমে দাঁড়ানো যায় না। বৃষ্টির মৌসুমে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
নীলিমা আক্তার বলেন, বিদ্যালয়টি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। আমরা শিশুদের নিয়ে খুব ভয়ে আছি। গত বুধবার বিম ধসে পড়ার পর থেকে আরো বেশি ভয়ে আছি।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মাহবুবুর রহমান খান বলেন, বিদ্যালয়টি ঝুঁকিপূর্ণ। বুধবারের ঘটনা আমাকে জানানো হয়েছে। উপজেলায় গিয়ে এ বিষয়ে কথা বলব।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শাহনেওয়াজ বেগম জানান, এ বিষয়ে তাকে সাথে সাথেই জানানো হয়েছে। তিনিও ওপর মহলে কথা বলে যাচ্ছেন।। শিশুদের নিরাপদে পাঠদানের বিষয়েও তিনি চেষ্টা করছেন বলে জানান তিনি।
নিকলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পাপিয়া আক্তার জানান, ঘটনার বিষয়ে তিনি সম্পূর্ণ অবগত আছেন। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে নিরাপদ আশ্রয়ে বিকল্প ব্যবস্থায় শিশুদের পাঠদান দেয়ার বিষয় নিয়ে।