ঝুঁকিপূর্ণ ১৮২ বিদ্যালয় ভবন, ঝুঁকি নিয়ে চলছে পাঠদান - দৈনিকশিক্ষা

ঝুঁকিপূর্ণ ১৮২ বিদ্যালয় ভবন, ঝুঁকি নিয়ে চলছে পাঠদান

খুলনা প্রতিনিধি |

খুলনায় ১১৫৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে ১৮২টি বিদ্যালয়ের ভবন। ফলে ওইসব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই অথবা অস্থায়ী চালা টিনের ঘরে পাঠদান চলছে। এমন পরিস্থিতিতে সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে দুর্ঘটনার শঙ্কায় অভিভাবকরা।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় ভবনগুলোর এমন হাল হয়েছে। মেরামত ও নতুন ভবণ নির্মাণে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

খুলনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, খুলনা মহানগরীসহ জেলার ৯ উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১১৫৯টি। এরমধ্যে ১৮২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ও অস্থায়ী চালাঘরে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে। ঝুঁকিপূর্ণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনগুলোর মধ্যে রয়েছে সদরে ১২, কয়রায় ২৬, ডুমুরিয়ায় ২১, তেরখাদায় ১৯, দাকোপে ১৫, দিঘলিয়ায় ১৩, পাইকগাছায় ৩৭, বটিয়াঘাটায় ১৫ ও রূপসা উপজেলায় ২৪টি।

ডুমুরিয়ার ১৬২ নম্বর গজালিয়া অগ্নিবীণা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেবদাস বলেন, ৭-৮ বছর আগে থেকে ওই বিদ্যালয়ের ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। এরপর ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। কিন্তু পরিত্যক্ত ওই ভবন অপসারণ করা হয়নি। সে কারণে বিদ্যালয় ভবনের শ্রেণিকক্ষে পাঠদান হয় না। পাশে তৈরি করা চালাঘরে শিক্ষার্থীদের পড়ানো হচ্ছে।

একই উপজেলার খর্ণিয়া ইউনিয়নের টিপনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মৃদুলা দেবনাথ জানান, চার-পাঁচ বছর আগে বিদ্যালয় ভবনটিতে অসংখ্য ফাটল দেখা দেয়। বর্তমানে একদম জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের নিচতলা। সে কারণে আপাতত টিনশেড ঘর তৈরি করে সেখানে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হচ্ছে। তবে শ্রেণিকক্ষ সংকট থাকায় ভবনের ওপরের তলায় ক্লাস নেওয়া হয়।

আসমা বেগম ও লাইলি বেগমসহ বেশ কয়েকজন অভিভাবক জানান, ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠিয়ে খুব আতঙ্কে থাকেন তারা। প্রায়ই বিদ্যালয় ভবনের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে। অনেক সময় ছেলে-মেয়েদের গায়ের ওপরও পড়ে। যে কোনো সময়ই ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। তাই ভবনগুলো দ্রুতই ভেঙে নতুন করে নির্মাণের দাবি জানান তারা।

বটিয়াঘাটা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জিএম আলমগীর কবির বলেন, তার উপজেলায় ১৫টি বিদ্যালয়ের ভবন জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ। এরমধ্যে খুব বেহাল অবস্থা বুজবুনিয়াসহ তিন-চারটি ভবন। সেখানে টিনশেড ঘর তৈরি করে শিক্ষার্থীদের পড়ানো হচ্ছে। এছাড়া শিক্ষা কমিটির সভার আলোচনার ভিত্তিতে মন্ত্রণালয়ে তালিকা পাঠানো হয়েছে।

পাইকগাছা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিদ্যুৎ রঞ্জন সাহা বলেন, জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর মধ্যে যেখানে যেখানে সংশ্লিষ্ট প্রধান শিক্ষক লিখিতভাবে জানিয়েছেন সেসব বিদ্যালয় ভবনে পাঠদানের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এছাড়া মন্ত্রণালয়েও বিষয়টি জানানো হয়েছে।

ডুমুরিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান বলেন, তার উপজেলায় ২০টির মতো ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে পাঠদান সম্পূর্ণ নিষেধ করা হয়েছে। তবে যেগুলো চালানোর মতো সেগুলোতে এখনো ক্লাস নেওয়া হচ্ছে।

তেরখাদা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম বলেন, তেরখাদা উপজেলায় ১৯টি বিদ্যালয় ভবনেই পাঠদান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দোচালা টিনশেড ঘর তৈরি করে সেখানে পাঠদান করানো হচ্ছে।

খুলনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ অহিদুল আলম বলেন, জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। নতুন করে ভবন নির্মাণ ও সংস্কার করা হবে।

যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার - dainik shiksha কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত - dainik shiksha উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে - dainik shiksha ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন - dainik shiksha সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের - dainik shiksha জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক - dainik shiksha মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028188228607178