পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে(পবিপ্রবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই পক্ষের বাগবিতণ্ডা ও মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার জেরে শাখা ছাত্রলীগের ২ নেতাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র থেকে জানা যায়, মহান বিজয় দিবস উদযাপনে ক্যাম্পাস আলোকসজ্জার খরচ থেকে উদ্বৃত্ত টাকা ভাগাভাগি নিয়ে মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকাল ৩ টায় এই বাগবিতণ্ডা ও মারামারির ঘটনা ঘটে। মূলত আলোকসজ্জায় বরাদ্দকৃত উদ্বৃত্ত অর্থ নিয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সম্পাদক মেহেদী হাসান তারেক,
ঘটনার ফলশ্রুতিতে একই দিন সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মশিউর রহমান বাবু ও সাইফ হোসেনকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে এ ২ নেতার বিরুদ্ধে কেনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে আগামী ৭ দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে লিখিত জবাব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সদ্য বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা মশিউর রহমান বাবু দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে আলোকসজ্জা উপ-কমিটিতে আমি ছাত্রলীগ প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করি। এতে শাখা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান তারেক আমার কাছে চাঁদা দাবি করে। আমি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সে আমাকে হুমকি দেয়। পরবর্তীতে তার সঙ্গে বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়।
তিনি আরো বলেন, আমার বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের পরবর্তী ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে মনোনীত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, এতে প্রতিহিংসাবশত মেহেদী হাসান তারেক আমার বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় কমিটিকে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করেছে।
অপর বহিষ্কৃত নেতা সাইফ হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, কোনো অপরাধে আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে তা আমি অবগত নই, তবে আমি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মশিউর রহমানের সঙ্গে রাজনৈতিক পথচলায় একসাথে রয়েছি। তার (মশিউর) পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এ কারণেই আমাকে জড়িয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান তারেক বলেন, ক্যাম্পাসে যেহেতু গ্রুপিং আছে আর আমি যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দায়িত্বে আছি তাই তারা আমাকে হেনস্তা করে নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে চেয়েছে। এর প্রেক্ষিতেই বিকেলে তারা আমার ওপর অতর্কিত হামলার চেষ্টা করেছে। আর যারা গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী কার্যকালাপে যুক্ত হবে তাদের জায়গা বাংলাদেশ ছাত্রলীগে নেই। তবে তিনি আলোকসজ্জা উপ-কমিটির কাছ থেকে চাঁদা চাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় দিবস উদযাপনের টাকা নিয়ে হাতাহাতির এ ঘটনার কারণ জানতে চাওয়া হলে বিজয় দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. ফজলুল হক বলেন, বিজয় দিবস সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের জন্য কয়েকটি উপ-কমিটি করা হয়েছিলো, উপ-কমিটি বাজেট উত্থাপন করলে সে বাজেট পাস করা হয়, পরবর্তী কোন ঘটনার দায় মূল কমিটি বহন করবে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার বসু দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এখন পর্যন্ত সংঘর্ষের কোনো অভিযোগ আমার কাছে আসেনি, তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাত্রলীগের ২ জন বহিষ্কৃত হওয়ার সংবাদ জেনেছি।