দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করেও আসন্ন এইচএসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়ার দাবিতে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডে হাজির হয়েছিলেন রাজধানীর টিকাটুলীর সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজের শতাধিক ছাত্রী। সঙ্গে অনেকের অভিভাবকও ছিলেন।
বৃহস্পতিবার শিক্ষা বোর্ডে যাওয়ার আগে তারা গত ১৫ দিন ধরে কলেজে নানাভাবে চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ ফেল করা ছাত্রীদের রিটেস্টের সুযোগ দিতে চাইলেও তারা তা নিচ্ছে না। তারা আর কোনো পরীক্ষা ছাড়াই আগামী ৩০ জুন অনুষ্ঠেয় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিতে চান।
ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, টেস্টে ফেল করলে বোর্ডের কিছু করণীয় নেই। আপনাদের কলেজ এ বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত দেবে তা-ই চূড়ান্ত।
নুরজাহান তানিয়া দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, আমরা মোট ৯৬ জন পদার্থসহ বিভিন্ন বিষয়ে ফেল করেছি। আমরা পরীক্ষা দিতে চাইলেও আমাদের কলেজ আমলে নিচ্ছে না। টেস্টে ফেল করায় আমরা ফরম পূরণ করতে পারছি না। ফরম পূরণ চলছে।
কান্নাবিজড়িত কন্ঠে নুরজাহান বলেন, ‘একটি বছর আমাদের শিক্ষা জীবনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এক বছর পেছালে আমাদের শিক্ষা জীবন ধ্বংস হয়ে যাবে।
আসলাম নামের একজন অভিভাবক দাবি করেন, কলেজ থেকে হয়রানি করছে।
এ ব্যাপারে সেন্ট্রাল ওমেন্স কলেজের অধ্যক্ষ সফিকুল ইসলাম বলেন, ছাত্রীদের প্রথম বর্ষ থেকে একাধিকবার সতর্ক করা হয়েছে ঠিকমতো ক্লাস করার জন্য, কিন্তু তাদের উপস্থিতি ছিলো ৪০ শতাংশের কম।
কলেজ সভাপতি ও অধ্যক্ষকে বারবার তাগাদা দিতো এদের উপস্থিতি বাড়ানো যায় কীভাবে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে।
অধ্যক্ষ সফিকুল ইসলাম বলেন, কিন্তু কলেজ থেকে একাধিকবার অভিভাবক মিটিং ডাকা হলেও অর্ধেকের বেশি অভিভাবক অনুপস্থিত থাকতেন। প্রাক নির্বাচনী পরীক্ষায় প্রায় ৪৫০ ছাত্রী অকৃতকার্য হয়।
অধ্যক্ষ দাবি করেন, তখন শিক্ষকরা মিটিং করে পুনঃনির্বাচনী পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিই এবং অভিভাবকরা ও এই শর্তে একমত হয় এবং বলা হয় পুনঃনির্বাচনী পরীক্ষায় আবার যদি কেউ অকৃতকার্য হয় তবে তারা আর কোনো ধরনের আবদার করতে পারবেন না এই মর্মে একটি অঙ্গীকারনামায় ছাত্রী এবং অভিভাবকরা স্বাক্ষর করেন।
অধ্যক্ষ আরো বলেন, পুনঃনির্বাচনী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৪৫০ ছাত্রীর মধ্যে আবার ৮৫ জনের মতো অকৃতকার্য হয়। এবং এই ছাত্রীগুলোর বেশিরভাগ কলেজে অনুপস্থিত থাকতো আর এদের অভিভাবকদেরও কখনো কোনো অভিভাবক মিটিংয়ে পাওয়া যেতো না।
এই অকৃতকার্য শিক্ষার্থীরা ৩ দিন আগে কলেজে এসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলো এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করার জন্য, তখন কলেজ কর্তৃপক্ষ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তিনি বলেন ২৪ এপ্রিল আবার শিক্ষক মিটিং ডাকা হলো অকৃতকার্য ছাত্রীদের পুনরায় পরীক্ষা নেয়ার ব্যাপারে, তার মধ্যে শুধু তিন জন শিক্ষক পরীক্ষা নেয়ার ব্যাপারে মত দেন, কিন্তু পদার্থ ও রসায়ন বিজ্ঞানের শিক্ষক বলেন আমরা লিখিত দিতে পারবো, এই ছাত্রীদের আবার পরীক্ষা নিলে কেউই পাস করবেন না বলে জোর দাবি করেন।
অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ২৫ এপ্রিল পাঁচজন পরীক্ষার্থী ছাড়পত্র নিয়ে চলে যায়। ফেল করা কোনো পরীক্ষার্থীকে আমি ফরম ফিলাপের অনুমতি দিতে পারবো না বলে জানান অধ্যক্ষ।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।