দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক : ডলার পাঠানোর কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া প্রতারকচক্রের মূলহোতা সোহেল আহমেদ অপুকে (২৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) রাজধানীর মালিবাগের সিআইডি সদরদফতরে মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া।
সিআইডি প্রধান বলেন, উত্তরা পশ্চিম থানায় সুমন আল রেজা (৪০) প্রতারণার মামলা করেন। তার অভিযোগের ভিত্তিতে মিরপুরের পাইকপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সিআইডি প্রধান আরও বলেন, সুমনের সঙ্গে প্রতারক চক্রের ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়। পরিচয়ের একপর্যায়ে প্রতারক চক্রের এক সদস্য নিজেকে ফ্লোরিডা সিটি ব্যাংকের কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দেন। এরপর তিনি বলেন যে, ফ্লোরিডা সিটি ব্যাংকের একজন গ্রাহকের ৬০ লাখ ডলার ডিপোজিট রয়েছে। গ্রাহক হাইতিতে ২০১০ সালের ১২ জানুয়ারিতে মৃত্যুবরণ করেন। আর তার কোনো ওয়ারিশ নেই। এরপর সুমনকে উক্ত ব্যাংকটির গ্রাহকের ওয়ারিশ হওয়ার জন্য প্রলুব্ধ করেন প্রতারক। এরপর ডিপোজিটকৃত টাকা উত্তোলনের পর দুজনে সমানভাগে ভাগ করে নেয়ার প্রস্তাব দেন। পরবর্তীতে প্রতারক সুমনের কাছে লাগেজ ভর্তি ডলার কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠানোর চার্জ বাবদ ৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা দাবি করেন।
সিআইডি প্রধান বলেন, সেই টাকা প্রদান করার পর প্রতারক চক্রটি ফেডারেল ট্যাক্স হিসাবে ৫৫ হাজার ডলার (৬১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা) দাবি করেন। সুমন লাগেজ ভর্তি ডলারের প্রলোভনে পড়ে প্রতারক চক্রের কথা মতো, বাংলাদেশ ফেডারেল ট্যাক্স হিসাবে ৫৫ হাজার ডলার গোল্ডেন লজিস্টিক এন্টারপ্রাইজের একাউন্ট নং-১৬৪১১০০০৬৬৮৯৬ ডাচ বাংলা ব্যাংক, মিরপুর-১০ শাখা ঢাকায় পাঠিয়ে দেন।
তিনি বলেন, শর্ত মোতাবেক পার্সেল না পাওয়ায় সুমন বুঝতে পারেন যে, তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এই সংক্রান্ত উত্তরা পশ্চিম থানায় তিনি একটি প্রতারণার মামলা করেন।
সিআইডি প্রধান বলেন, এরপর মামলাটির তদন্তভার সিআইডিতে আসে। ব্যাংক একাউন্ট হতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এরপর গত ২৫ জানুয়ারি মো. আকাশ (২৩) নামে একজনকে নারায়ণগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ থানাধীন চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্র (৯নং ওয়ার্ড) হতে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তার দেয়া তথ্যমতে, প্রতারণাকারী চক্রের আরেক সদস্য মো. ইব্রাহিমকে (৩০) একই দিন ঢাকার কল্যাণপুর পোড়াবস্তি হতে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি বলেন, আদালতের মাধ্যমে তাদের জেলহাজতে পাঠানো হলে, তাদের স্বীকারোক্তি অনুসারে প্রতারণাকারী চক্রর মূলহোতা সোহেল আহমেদ অপুর নাম উঠে আসে। এর প্রেক্ষিতে তাকে বুধবার দিবাগত রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথামিক তদন্তে জানা যায়, চক্রটি বিভিন্ন ভুক্তভোগীর নিকট থেকে প্রায় ২ কোটি ৩০ লাখ ১৮ হাজার ৩২৬ টাকা প্রতারণা করে ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছে।