মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হাবিবুর রহমানের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করলো বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গ্রন্থাগারিক ও সহকারী গ্রন্থাগারিকরা। আগের নিয়মে নিয়োগ পরীক্ষা নেয়ার দাবিতে তারা লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিলেন।
সোমবার বিকেলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে অধিদপ্তরের সামনে থেকে সরে যান চাকরি প্রত্যাশীরা।
আন্দোলনকারীরা জানান, মাদরাসা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হাবিবুর রহমানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা তাদের আশ্বাস দিয়েছেন। তবে পরবর্তীতে যদি দ্রুত সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হয় তাহলে তারা আবার কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।
এর আগে, রাজধানীর নিউ বেইলি রোডে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান চাকরি প্রত্যাশী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন আন্দোলনকারীরা।
চাকরি প্রত্যাশী প্রার্থীরা জানান, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে এমপিও নীতিমালায় গ্রন্থাগারিক ও সহকারী গ্রন্থাগারিক নামে দুটি পদ সৃষ্টি করে ২০২০-২১ অর্থবছর থেকে কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ শুরু হয়। তবে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারির শুরু থেকে ওই দুই পদে নিয়োগে ডিজির প্রতিনিধি মনোনয়ন বন্ধ করে দেয় মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। ফলে প্রক্রিয়াধীন থাকা নিয়োগ কার্যক্রমগুলো আটকে যায়। পরে একই বছর জুলাইতে ওই দুই পদকে শিক্ষক মর্যাদা দিয়ে নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয় বেসরকারি শিক্ষক-নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষকে (এনটিআরসিএ)। ফলে প্রক্রিয়াধীন থাকা নিয়োগ কার্যক্রম আর শুরু করা যায়নি। প্রার্থীরা সে সময় প্রক্রিয়াধীন থাকা মাদরাসার গ্রন্থাগার বিষয়ের সহকারী শিক্ষক ও প্রভাষক পদগুলোর নিয়োগ আগের নিয়মে শেষ করার দাবি জানিয়েছেন।
তারা বলেন, আমরা চাকরির আবেদন করে নিয়োগ পরীক্ষার অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের তৎকালীন সচিবের মৌখিক নির্দেশনায় ডিজির প্রতিনিধি মনোনয়ন বন্ধ থাকে। পরে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ জুলাই ওই পদগুলোকে শিক্ষক মর্যাদা দিয়ে নিয়োগের দায়িত্ব এনটিআরসিএকে দেয়া হয়। অতীতের বিভিন্ন সময় এরকম অফিস আদেশ বা পরিপত্রের একাংশে আগে আবেদন করা চাকরিপ্রত্যাশীদের প্রক্রিয়াধীন থাকা নিয়োগ কার্যক্রম আগের নিয়মে সম্পন্ন করার সুযোগ রাখা হয়েছে। কিন্তু মাদরাসার গ্রন্থাগার শিক্ষক ও প্রভাষক নিয়োগের ক্ষেত্রে তা হয়নি।
বক্তারা বলেন, প্রক্রিয়াধীন থাকা নিয়োগ পরীক্ষা আগের নীতিমালা অনুযায়ী সম্পন্ন করার দাবিতে আমরা সারা দেশের চাকরিপ্রত্যাশীরা গত তিন বছর ধরে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে আসছি। এছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ধরনা দিয়েও এখনো পর্যন্ত কোনো সমাধান পাইনি। চাকরির নির্ধারিত বয়স প্রায় শেষের দিকে, তাই চরমভাবে বৈষম্যের শিকার হয়েছি। মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এ বিষয়ে আলোচনার আশ্বাস দিয়েছেন, মন্ত্রণালয়ে চিঠিও পাঠিয়েছেন, তবে আমরা কোনো সমাধান পাইনি। তাই আমরা অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছি। বিকেলের মধ্যে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা আমাদের কোনো সিদ্ধান্ত না জানালে আমরা কঠোর কর্মসূচি, এমন কী আমরণ অনশনের ঘোষণা দেবো।
