ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (ডুয়েট) ছাত্রলীগ নেতাদের ভিন্ন কৌশলে ও আলাদা নিরাপত্তা ব্যবস্থায় পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ডুয়েট শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
ডুয়েট সূত্রে জানা যায়, আগামী রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) থেকে ছাত্রলীগ নেতাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় আলাদা পরীক্ষার হলসহ পর্যাপ্ত নিরাপত্তায় পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করেছে ডুয়েট প্রশাসন।
শিক্ষার্থীরা জানায়, ছাত্রলীগ নেতাদের অত্যাচারে স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারেনি কোনো শিক্ষার্থী। সর্বশেষ কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে আন্দোলনকারীদের নানাভাবে হেনস্তা করেছে ডুয়েট ছাত্রলীগ। হল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। ডুয়েটে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলেও হুমকি দেয় ছাত্রলীগের নেতারা। সবকিছু প্রমাণসহ প্রশাসনের কাছে জমা দেওয়া হলেও ডুয়েট প্রশাসন কোনো ধরনের বিচার না করেই, বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় পরীক্ষা নিয়ে তাদের বাঁচিয়ে দিচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ডুয়েটের শিক্ষকরা কখনোই সাধারণ শিক্ষার্থীবান্ধব হতে পারেনি। আমরা ভার্সিটি খোলার প্রথম দিন থেকেই বিচারের দাবি করে আসছি। অন্যায়কারীদের বিচার হওয়া ছাড়া আমরা পরীক্ষায় বসবো না এমনটাও জানিয়েছি। ডুয়েট প্রশাসন অপরাধীদের বিচার করবে বলে নিশ্চিয়তা দিয়ে আমাদের পরীক্ষা দেওয়ার আহ্বান জানায়। কিন্তু এখন গোপনে তারাই ছাত্রলীগকে পরীক্ষার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ হয়েছে তারা বিচার প্রক্রিয়া শেষ হওয়া পর যদি নির্দোষ প্রমাণিত হয় তখন যেন পরীক্ষা দেয়। ক্যাম্পাসে আন্দোলন চলমান রয়েছে। কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ডুয়েট শাখার সাবেক সভাপতি ও স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থী সোহাগ সরদার বলেন, ডুয়েট ছাত্রলীগের দ্বারা ২০১১-২০১২ খ্রিষ্টাব্দ থেকে আমি নির্যাতিত। তাদের কারণে আমি ক্যাম্পাসে যেতে পারিনি। এত দিনেও আমার শিক্ষা জীবন শেষ করতে পারিনি। ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দ ভিসির কাছে আমার জীবনের নিরাপত্তা চেয়েও পাইনি। তাই আমিও চাই অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত যেন পরীক্ষাসহ তারা কোনো একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ না নিতে পারে।
এ বিষয়ে ডুয়েট ছাত্রকল্যাণের পরিচালক ড. উৎপল কুমার বলেন, আমাদের বিচার প্রক্রিয়া চলমান, তদন্ত সাপেক্ষে আমরা অপরাধী চিহ্নিত করে তাদের অবশ্যই বিচারের ব্যবস্থা করবো। কিন্তু এখনো যেহেতু তারা অপরাধী প্রমাণিত হয়নি তাই আমরা তাদের পরীক্ষা দেওয়ায় বাধা দিতে পারি না। তারা যদি দোষী প্রমাণিত হয়, তাদের আমরা তাদের ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট আটকিয়ে দিয়ে হলেও শাস্তির আওতায় আনবো।