দৈনিক শিক্ষাডটকম, ঢাবি : দেশের সব থেকে বড় সরস্বতী পূজা বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হলে অনুষ্ঠিত হবে। পূজায় দেশ-বিদেশ থেকে অনেক পুণ্যার্থী এসে জড়ো হবেন বলে প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে সরেজমিনে জগন্নাথ হলে দেখা যায়, সমগ্র হলজুড়ে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। প্রস্তুতি শেষ হলেও কোথাও চলছে প্যান্ডেলের কাজ, কোথাও প্রতীমা সাজানোর কাজ। বাঁশ, বেত, রঙ, হাতুড়ি- পেরেকের ঠুকঠাক শব্দে মেতে উঠেছে পুরো হল। হলের অক্টোবর স্মৃতি ভবনের পাশে অনেকগুলো প্রতীমার দেখা মেলে। প্রায় সবগুলোরই মৌলিক গঠন শেষ। মৃৎশিল্পীরা প্রতীমাগুলোর দেহে রঙতুলির আঁচড় দিয়ে এখন নির্দিষ্ট মণ্ডবে সাজাতে ব্যস্ত।
এছাড়াও জগন্নাথ হলের উপাসনালয় প্রাঙ্গণে চলছে সবচেয়ে বড় প্রতীমা বানানোর কাজ। চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের বানানো এই প্রতীমা বসানো হবে হলের পুকুরে। বাঁশ-বেতের বিভিন্ন অংশজুড়ে দিয়ে প্রতীমার অবয়ব স্পষ্ট হয়েছে। বাকি কাজ সম্পন্ন করতে পূর্ণ প্রস্তুতিতে তোড়জোর চলছে। এছাড়া হলের মাঠে ৬৯টি বিভাগের আয়োজনে বসবে ৬৯টি মণ্ডপ এবং হলের কর্মচারীদের আরেকটি মণ্ডবসহ মোট ৭২টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। প্যাণ্ডেল, মণ্ডপ-কাঠামো তৈরির কর্মযজ্ঞ চলছে সেখানেও।
জগন্নাথ হল ছাড়াও মেয়েদের পাঁচটি হলে আয়োজন করা হয়েছে পূজার। সব মণ্ডপে পূজা শুরু হবে সকাল ৯টা থেকে। এরপর বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত চলবে অঞ্জলি। পূজার পরের দিন অনুষ্ঠিত হবে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পূজার সার্বিক বিষয়াবলী দেখভাল করার জন্য তিন সদস্যের পূজা উদযাপন কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সভাপতি হিসেবে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা, আহ্বায়ক ড. কালিদাস ভক্ত ও যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে আছেন মিঠুন কুমার সাহা দায়িত্ব পালন করছেন।
পূজা উদযাপন বিষয়ে জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ ও পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা বলেন, প্রস্তুতির ব্যাপারে বলতে গেলে আমরা এত বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে যা যা করণীয় সেভাবেই এগিয়েছি। আমি গতকাল রাতেও পরিদর্শন করেছি। এবারের পূজা একটু বিশেষ ধরনের আকর্ষণ। কারণ একদিকে পহেলা ফাল্গুন, ভালোবাসা দিবস একসাথে পড়েছে। আবার লোকজনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার জন্য নতুন সংযোজন মেট্রোরেল চালু হওয়াতে আমরা আশা করছি আরও বেশি পূণ্যার্থী-দর্শনার্থী পূজা দেখতে আসবেন। একই সময়ে আবার বইমেলাও চলছে। সবমিলিয়ে একটা মাহেন্দ্রক্ষণ।
নিরাপত্তার ব্যাপারে তিনি বলেন, আমরা পুলিশ প্রশাসনের সবসময় সহায়তা পাই। তাদের সঙ্গে আমরা বৈঠক করেছি, নিরাপত্তার ব্যাপারে তাদের সাহায্য চেয়েছি। আমাদের প্রক্টরের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে, তিনিও সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন। আমাদের যারা নিরাপত্তাকর্মী আছে তারাও নিয়োজিত থাকবে। এবার আমরা চেষ্টা করছি আমাদের নিরাপত্তাকর্মীদের পরিচয়পত্র বা জগন্নাথ হল লেখা জ্যাকেট দিতে। আমাদের সহায়তার জন্য আরও কিছু আনসার থাকবে এবং ডেইলি বেসিসে কাজ করো এমন কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মীকে আমরা রাখবো। সব মিলিয়ে আমাদের চেষ্টা থাকবে একটা নিরাপদ, সুষ্ঠু ও সুন্দর পূজা উপহার দেওয়া।
হিন্দুধর্ম মতে, মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে সাদা রাজহাঁসে আহরণ করে দেবী সরস্বতী জগতে আসেন।