ঢাবিতে ভর্তির আবেদন ফুটবলার মোরসালিনের - দৈনিকশিক্ষা

ঢাবিতে ভর্তির আবেদন ফুটবলার মোরসালিনের

ঢাবি প্রতিনিধি |

জাতীয় দলের সাফ ক্যাম্পে থাকায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারেননি শেখ মোরসালিন। আর তাই চলতি শিক্ষাবর্ষে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে তার ভর্তি হওয়ার সুযোগ ছিল না। এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয় খেলোয়াড়দের পরীক্ষা ছাড়াই ভর্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে গতকাল। এতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বার উন্মুক্ত হয় তরুণ ফুটবলার শেখ মোরসালিনের।

আজ থেকে ভর্তিচ্ছু খেলোয়াড়দের আবেদন গ্রহণ শুরু করেছে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। প্রথম দিনেই আবেদন করেছেন বাংলাদেশের ফুটবলের উঠতি তারকা শেখ মোরসালিন।

আবেদন করে আল্লাহর প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ফরিদপুর থেকে উঠে আসা এই ফুটবলার, ‘আল্লাহর প্রতি আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। সাফের প্রাথমিক দলেও আমি ছিলাম না। পরবর্তীতে সুযোগ পাই এবং দেশের হয়ে খেলি। দেশের হয়ে খেলার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারিনি। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে হলে পরের বছর পরীক্ষা দেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি ভর্তির সুযোগ পাচ্ছি শুধু জাতীয় দলে খেলার জন্যই। জাতীয় দলে খেলা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ দু’টিই আল্লাহ আমাকে দিয়েছেন।’

দেশের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব মোহামেডান ও শীর্ষ ক্লাব বসুন্ধরা কিংসের হয়ে খেলেছেন মোরসালিন। জাতীয় দলে পাঁচ ম্যাচে দুই গোল করেছেন। গোল ও ম্যাচ সংখ্যার চেয়ে মোরসালিনের খেলার গুণ সবাইকে মুগ্ধ করেছে। বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসি ও এইচএসসি দু’টোতেই জিপিএ ফাইভ ফুটবলার শেখ মোরসালিনের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া এখন মোরসালিনের জন্য সময়ের ব্যাপারই মাত্র,‘মোরসালিন অত্যন্ত প্রতিভাবান এবং একাডেমিকভাবেও দারুণ। এ রকম যোগ্যতাবান ক্রীড়াবিদদেরকেই আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী করতে চাই যারা বিশ্ববিদ্যালয়কেও আলোকিত এবং নিজেকেও আরো শাণিত করতে পারে’-বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক শাহজাহান আলী। 

মোরসালিন ফুটবলের পাশাপাশি নিজেকে উচ্চ শিক্ষিতও করতে চান। জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম তার আদর্শ, ‘বিকেএসপিতে যখন ভর্তি হই তখন থেকেই আমার লক্ষ্য শিক্ষিত ক্রীড়াবিদ হওয়া। এখন পর্যন্ত সেই লক্ষ্যেই রয়েছি। মুশফিক ভাই পেরেছেন আমাকেও পারতে হবে এমন একটা অনুপ্রেরণা কাজ করত সব সময়’-বলেন মোরসালিন।

খেলা ও পড়া দু’টোই সর্বোচ্চ পর্যায়ে চালিয়ে যাওয়া বেশ কষ্টকর। সেই কষ্ট ইতোমধ্যে মানিয়ে নিতে শুরু করেছেন মোরসালিন,‘এসএসসিতে খেলার বেশি চাপ ছিল না। এইচএসসিতে আমি প্রিমিয়ারে খেলা শুরু করি। ক্লাবে পড়াশোনা করাটা একটু কষ্টকরই। এরপরও আমি যখনই সময় পেয়েছি পড়েছি।’ খেলার জন্য পড়ায় খানিকটা পিছিয়ে পড়লেও টানা পড়ে ঘাটতি পুরণও করেছেন। 

প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়াঙ্গনেও রয়েছে অনেক অবদান। শতবর্ষী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খেলোয়াড় কোটার ভর্তির নিয়মেও পরিবর্তন হয়েছে বেশ কয়েকবার। এই কোটা ব্যবহার করে অখেলোয়াড়, জাতীয় পর্যায়ের খেলোয়াড়কে জাতীয় দলের খেলোয়াড় হিসেবেও ভর্তির ঘটনা ঘটেছে। এ সব কারণে মাঝে খেলোয়াড় কোটা একেবারে বন্ধও ছিল।

সম্প্রতি বিকেএসপির ক্রীড়াবিদরা কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষায় ন্যূনতম পাশ মার্ক পেলে ভর্তির সুযোগ পেতেন। গতকাল উপাচার্যের উপস্থিতিতে ভর্তি কমিটির সভায় জাতীয় পর্যায়ে খেলোয়াড়দের কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ছাড়াও ভর্তি হওয়ার সুযোগ দিয়েছে। নতুন পদ্ধতির ভর্তি কার্যক্রম সম্পর্কে শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক বলেন,‘ক্রীড়াবিদদের ভর্তি নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে নানা পর্যালোচনা হয়েছে। সেই আলোকে ফুটবল, ক্রিকেট ,হকিসহ বিভিন্ন খেলায় জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের প্রাধান্য এবং অ্যাথলেটিক্স,দাবা, টিটি ব্যক্তিগত খেলাগুলোতে শীর্ষ অবস্থানকারীদের একাডেমিক যোগ্যতা সাপেক্ষে ভর্তির সুযোগের সিদ্ধান্ত হয়েছে।’ 

জাতীয় খেলোয়াড়দের ভর্তিতে বয়সেও শিথিলতা দেওয়া হয়েছে। ২৩ বছর পর্যন্ত জাতীয় খেলোয়াড়রা ভর্তি হতে পারবেন। একজন সাধারণ শিক্ষার্থী ২৩ বছরে স্নাতক শেষ করে সেখানে খেলোয়াড়দের ২৩ বছরেও ভর্তির সুযোগ দেওয়ার কারণ সম্পর্কে পরিচালক বলেন, ‘অনেক সময় খেলোয়াড়রা এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা খেলার জন্য সময় মতো দিতে পারেন না। ওখানে অনেকের ১/২ বছর নষ্ট হয়। আবার অনেক খেলোয়াড় ভর্তি প্রক্রিয়ার সময় দেশের বাইরেও থাকে। ক্রীড়াবিদরা যেন উচ্চ শিক্ষার আলো পায় এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পর্যালোচনা করে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু ) সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মানিক নতুন সিদ্ধান্তকে খুব সতর্কতার সাথে ব্যবহারের পরামর্শ দিলেন,‘ক্রীড়াঙ্গনের জন্য অত্যন্ত দারুণ খবর। এই সুযোগের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করতে হবে। সুশৃঙ্খলভাবে ভর্তির ওপর নির্ভর করবে এই নিয়মের স্থায়িত্ব।’ 

শিক্ষকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha শিক্ষকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন শিক্ষা উপদেষ্টা বেতন ও বিবেকের স্বাধীনতায় পিছিয়ে বাংলাদেশের শিক্ষকরা - dainik shiksha বেতন ও বিবেকের স্বাধীনতায় পিছিয়ে বাংলাদেশের শিক্ষকরা জাতীয়করণসহ শিক্ষকদের ১০ দাবি - dainik shiksha জাতীয়করণসহ শিক্ষকদের ১০ দাবি দেশের সবচেয়ে দুর্বল জায়গা শিক্ষাব্যবস্থা: ফখরুল - dainik shiksha দেশের সবচেয়ে দুর্বল জায়গা শিক্ষাব্যবস্থা: ফখরুল কিন্ডারগার্টেন নিবন্ধন বিধিমালা বাতিল করে নতুন প্রজ্ঞাপন দাবি - dainik shiksha কিন্ডারগার্টেন নিবন্ধন বিধিমালা বাতিল করে নতুন প্রজ্ঞাপন দাবি তরুণ প্রজন্ম অপরাজনীতিতে লিপ্ত: শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha তরুণ প্রজন্ম অপরাজনীতিতে লিপ্ত: শিক্ষা উপদেষ্টা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0054218769073486