ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর পরিচালক ও নর্দান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু ইউসুফ মো. আবদুল্লাহকে গ্রেফতার ও পরিচালক পদ থেকে অপসারণের দাবি করেছে ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।
তারা বলছে, ড. ইউসুফ আব্দুল্লাহ যাত্রবাড়ীতে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা হত্যা মামলার আসামি। এছাড়া তিনি গত ২৫ আগস্ট নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর সরাসরি উপস্থিত থেকে শারীরিকভাবে আন্দোলনরতদের আক্রমণ করেন।
সূত্র জানিয়েছে, শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ড. ইউসুফ আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলাসহ দুইটি মামলা হয়েছে। গত ২৮ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানায় তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়। এই মামলায় তাকে আসামি করা হয়েছে (৮০ নম্বর আসামি)। মামলায় তাকে আওয়ামী লীগ নেতা ও অর্থ যোগানদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া ২৯ আগস্ট বনানী থানায় আরেকটি হত্যাচেষ্টা মামলা হয় (মামলা নম্বর ৮)।
অভিযোগ আছে— অনেকটা জবর-দখল করে বেসরকারি নর্দান ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের (বিওটি) চেয়ারম্যান হন আবু ইউসুফ মো. আবদুল্লাহ। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠাকালীন বোর্ড কব্জায় নিয়ে নিজ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গড়েছেন নতুন ট্রাস্টি বোর্ড।
আবু ইউসুফ আব্দুল্লাহর দখল থেকে নর্দান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ ফেরত পেতে ইতোমধ্যে শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর আবেদন দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির কয়েকজন ট্রাস্টি। গত ৮ সেপ্টেম্বর উপদেষ্টাকে দেওয়া আবেদনে বলা হয়, ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে ইউসুফ আব্দুল্লাহ গংদের নেতৃত্বে নর্দান পরিবারের প্রতিষ্ঠানসমূহ হাইজ্যাক করা হয়। তারা প্রতিষ্ঠানসমূহের হিসাব নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ট্রাস্টি বোর্ডে পারিবারিক সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল প্রতিষ্ঠানের হিসাব থেকে টাকা উত্তোলন করে বিদেশে পাচার করেছে। আবেদনে তারা ইউসুফ আব্দুল্লাহসহ তার পরিবারের সকল সদস্য এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করার আবেদন জানান।
সূত্রমতে, গত শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) অধ্যাপক আবু ইউসুফ মো. আবদুল্লাহকে গ্রেফতার করে ডিবি। রাজধানীর বনানী থেকে তাকে গ্রেফতার করে তাকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছিল। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এটা নিয়ে ইউসুফ আব্দুল্লাহর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অবিলম্বে তাকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় বড় ধরনের আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
নর্দান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র বলেন, আমাদের থেকে টাকা নেয় কিন্তু টিচারদের বেতন দেয় না। সুযোগ সুবিধা দেয় না। আমাদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা হয়। আমাদের মেয়েদের ওপরও হামলা হয়। আটক হওয়ার পর উনি ছাড়া পাওয়ায় আমরা আতঙ্কের ভেতর আছি। অবিলম্বে তার গ্রেফতার দাবি করছি।
ড. আবু ইউসুফ আব্দুল্লাহর প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজি আহমেদ খান বলেন, বিষয়টি অবহিত হয়েছে। দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।