ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ রচিত বইয়ে মুক্তিযুদ্ধের ‘ইতিহাস বিকৃতির’ অভিযোগ খতিয়ে দেখতে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি
সোমবার (৩ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর পিস অ্যান্ড লিবার্টির পরিচালক অধ্যাপক ফকরুল আলমকে প্রধান করে এ কমিটি গঠন করা হয়।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ রচিত বইয়ের নাম ‘হিস্টোরাইজিং ১৯৭১ জেনোসাইড: স্টেট ভার্সেস পারসন’। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক ও ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স অফিসের অনারারি পরিচালক।
এর আগে, দেশের একটি অনলাইন পোর্টালের এক কলামে সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বইটিতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছে অভিযোগ তোলেন। বইটির ৪০ পৃষ্ঠার উদ্ধৃতি তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এতে অধ্যাপক ইমতিয়াজ লিখেছেন, ‘১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শোনার জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নিজে হাজির হন। সে সময় বঙ্গবন্ধুকে বক্তব্যের শেষে ‘জয় বাংলা’ বলার পর ‘জয় পাকিস্তান’ বলতে শুনেছেন।’
গত রোববার অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপসারণ এবং তদন্ত কমিটি গঠন করে তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। এতে যোগ দেন বিচারপতি শামসুদ্দীন মানিক। তিনি সেখানে বলেন, তিনি (অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ) বইটিতে এমন কথাও লিখেছেন, যার অর্থ দাঁড়ায় যে ‘১৯৭১-এ বাংলাদেশে যা ঘটেছে তা ১৯৪৮ সালের জেনোসাইড কনভেনশনের আওতায় পড়ে না।’
তদন্ত কমিটির বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, এটা একটা একাডেমিক জায়গা, যে কোনো জিনিস বস্তুনিষ্ঠভাবে দেখতে হয়। যেহেতু একটা প্রশ্ন উঠেছে, তাই বিষয়টা বস্তুনিষ্ঠভাবে দেখার সুযোগ রয়েছে। কমিটি ওই বইটি পর্যালোচনা করে দেখবে। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে বিবৃতিও দিয়েছি, যারা বলেছেন তারা ভুল ব্যাখ্যা করেছেন। আর এটা ১৪ বছর আগের লেখা। এখনকার লেখা না। এখন তো আমার প্রচুর লেখা আছে। তদন্ত হতেই পারে।’