ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দীনের বিরুদ্ধে এর এম ফিল ও পিএইচডি থিসিসের মধ্যে চৌর্যবৃত্তির লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের স্বেচ্ছা অবসরগ্রহনকারী সহযোগী অধ্যাপক ড. আরিফ বিল্লাহ এই লিখিত অভিযোগ উপাচার্য বরাবর প্রদান করেন।
এসময় ‘‘ফারসি বিভাগের নানাবিধ অনিয়ম বিবেচনা এবং অধ্যাপক মোহাম্মাদ বাহাউদ্দিন- এর এম ফিল ও পিএইচডি থিসিসের মধ্যে সাদৃশ্যমূলক চৌর্যবৃত্তির যথাযথ তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন” শিরোনামে লিখিত অভিযোগপত্রটি উপ-উপাচার্য (শিক্ষা), কলা অনুষদ ডিন এবং সকল সিন্ডিকেট মেম্বারদের প্রদান করা হয়।
অভিযোগপত্রে বর্ণিত অধ্যাপক ড. বাহাউদ্দীনের এমফিল ও পিএইচডির বিষয় ছিলো: “বাংলাদেশে মরমী সাহিত্য ও রূমী চর্চায় ছৈয়দ আহমদুল হকের অবদান” এবং পিএইচডি: “সৈয়দ আহমদুল হক ও বাংলাদেশে সুফিবাদ” [একই ব্যক্তি, একই গবেষক দু রকম বানান]
লিখিত অভিযোগপত্রে বলা হয়, অধ্যাপক বাহাউদ্দীনের দুটি শিরোনামে একই গবেষণা প্রকাশ করা হয়েছে। প্রথমে এমফিল থিসিস সম্পন্ন করা হয়েছে এবং এই থিসিস থেকে অসংখ্য উদ্ধৃতি ও অণুচ্ছেদ হুবহু পিএইচডি থিসিসে ব্যবহার করা হয়েছে। এক্ষেত্রে নিয়মসিদ্ধ উদ্ধৃতি বা রেফারেন্স ব্যবহার করা হয়নি যা একাডেমিক বিচারে গুরুতর চৌর্যবৃত্তিমূলক অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে। অভিযোগ উঠেছে যে অনেকাংশে একই ধরণের লেখা বা তথ্য উপাত্ত ব্যবহার করে দুটি অভিসন্দর্ভ সম্পন্ন করে দুটি ডিগ্রী অর্জন করা হয়েছে। এ বিষয়ে কয়েকটি জাতীয় দৈনিকেও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এম ফিল ও পিএইচডি থিসিসের মধ্যে সাদৃশ্যমূলক চৌর্যবৃত্তি তুলনামূলক পর্যবেক্ষন করে ৩৩ পৃষ্ঠা সম্বলিত ফলাফল প্রস্তুত করা হয়।
লিখিত অভিযোগপত্রে ড. আরিফ বিল্লাহ বলেন, অতীতেও আমি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক কে এম সাইফুল ইসলাম খানের গুরুতর চৌর্যবৃত্তিসহ বিভিন্ন অনিয়ম (যেমন, অন্যের প্রবন্ধের প্রায় ৯৫% নিজের নামে এবং অন্যের বই নিজের নামে প্রকাশ) এবং বিভাগের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে উপাচার্য বরাবর সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষ্যে ব্যবস্থাগ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য বেশ কয়েকটি আবেদন করেছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে প্রায় ৬-৭ বছর অতিক্রান্ত হলেও অধ্যাবধি সে আবেদনগুলো আমলে নেয়া হয়নি। এর ফলে বিভাগে অনিয়ম দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।"
উল্লেখ্য, অধ্যাপক বাহাউদ্দীনের বিরুদ্ধে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগে “ঢাবি অধ্যাপকের এক গবেষণায় দুই ডিগ্রি” এবং “এমফিলের থিসিসে পিএইচডি” শিরোনামে নিউজ প্রকাশিত হয়। ডক্টর বাহাউদ্দিন মাত্র সাড়ে আট বছরে দেশে এই প্লেজারিজম করা এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি ব্যবহার করে অধ্যাপক হয়েছেন। যা সবাইকে অবাক করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন বিভাগে এরকম নজির নেই।