ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব হল ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে চারজন আহত হয়েছেন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতরা শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা মেডিকেল সেন্টার থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনার সূত্রপাত।
আহতরা হলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণাবিষয়ক উপসম্পাদক ও হলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রনক জাহান রাইন, প্রশিক্ষণ উপসম্পাদক তানিয়া আক্তার তাপসী, ছাত্রলীগ কর্মী সুলতানা ও সাধারণ শিক্ষার্থী শাহিদা আক্তার। তাদের মধ্যে শাহিদা খাবার আনতে হলের নিচতলায় গেলে তিনি দুই গ্রুপের সংঘর্ষের মধে পড়ে যান। এ সময় তাকে তাপসী গ্রুপের কর্মী মনে করে মারধর করা হয়।
শিক্ষার্থীরা জানায়, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণের জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেত্রী তানিয়া আক্তার তাপসী তার গ্রুপের জন্য আলাদা শাড়ি দাবি করলে হলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক শাড়ি দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে তাপসী বিষয়টি সৈকতকে জানালে তিনি সাধারণ পোশাকে শোভাযাত্রায় অংশ নিতে বলেন। পরে তাপসী ও তার অনুসারীরা আলাদাভাবে শোভাযাত্রায় অংশ নেন।
হলের সঙ্গে শোভাযাত্রায় যুক্ত না হওয়ার কারণে তাপসীকে হল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেয় হলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। পরে এ নিয়ে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। মধ্যরাত পর্যন্ত কয়েক দফায় চলে দুই পক্ষের মারধর।
পরে খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী, হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নিলুফার পারভীন, ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত ঘটনাস্থলে আসেন। দুই পক্ষের মধ্যে কথা চলাকালীন হলের পরিস্থিতি বার বার অশান্ত হতে থাকে। চলতে থাকেন স্লোগান-পাল্টা স্লোগান। পরে মধ্য রাতে নেতাকর্মীরা দুই পক্ষকে শান্ত করতে সমর্থ হন।
ঢাবির বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব হলের সভাপতি কোহিনূর আক্তার রাখি ও সাধারণ সম্পাদক সানজিনা ইয়াসমিনের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেত্রী তানিয়া আক্তার তাপসীর একটি গ্রুপ রয়েছে। তিনি ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারী।
তাপসী বলেন, আমার কিছু ছোটবোনকে নিয়ে আমি আলাদাভাবে প্রোগ্রামে গিয়েছি। এ জন্যই সভাপতি সাধারণ সম্পাদক আমার সঙ্গে ঝামেলা করেছে।
হল ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে একাধিকবার ফোন দিলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমরা উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। এখন সব ঠিক আছে।
ঢাবি প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। দুই পক্ষের সঙ্গেই কথা বলেছি। এখন পরিস্থিতি শান্ত।’