ফ্যাটাল ডিজিজ রিকোভারি ফান্ড (এফডিআরএফ) থেকে অর্থ বরাদ্দের দাবিতে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই অসুস্থ শিক্ষার্থী। তাদের অভিযোগ, এক বছর আগে আবেদন করেও এফডিআর ফান্ড থেকে আর্থিক সহায়তা মেলেনি।
সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে অনশন শুরু করেন ইবির দুই অসুস্থ শিক্ষার্থী। এসময় আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী অনশনে অংশ নেন। বিকেল ৪টার দিকে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসংলগ্ন মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব ম্যুরালের সামনে অবস্থান নেন।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের অনশন কর্মসূচি চলছে। তারা ফান্ডের অর্থের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও অসুস্থ শিক্ষার্থীদের অর্থ বরাদ্দের দাবি জানান।
ইবি শিক্ষার্থী চন্দন সাহা বলেন, আড়াই বছর আগে দুর্ঘটনায় আমার মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে কোমরের নিচ প্যারালাইজড হয়ে যায়। ভারতের চেন্নাইয়ে চিকিৎসায় অনেক টাকা ব্যয় হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য এফডিআর ফান্ডে আর্থিক সাহায্যের জন্য আবেদন করেছি এক বছর আট মাস হয়েছে। এখনও আমাকে কিছু জানানো হয়নি।
আরেক শিক্ষার্থী জহুরুল ইসলাম বলেন, আমার চোখে টিউমার হয়ে চোখ নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। চিকিৎসার জন্য অর্থ চেয়ে আবেদন করা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো সহায়তা পাইনি। অথচ শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর এই ফান্ডে টাকা দিয়ে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে আমরা অনশনে বসেছি।
শিক্ষার্থীরা জানান, তারা প্রতি বছর এফডিআর ফান্ডে ২০০ টাকা করে জমা দেন। তবে কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনায় ফান্ডে জমা অর্থের হিসাব মিলছে না। আলাদা ফান্ডে জমা হওয়ার কথা থাকলেও এ টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় হিসেবে অন্য খাতের সঙ্গে মিলিয়ে ফেলা হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা আবেদন কলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অর্থ বরাদ্দ দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ তাদের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আলমগীর হোসেন ভূইয়া বলেন, এফডিআর ফান্ডের নীতিমালায় কিছু সমস্যার কারণে অর্থ বণ্টন করা যায়নি। ইতিমধ্যে উপাচার্য নীতিমালা সংশোধনে কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। আমার প্রত্যাশা নীতিমালা সংশোধন করে কমিটি দ্রুত রিপোর্ট প্রদান করবে। পরে আইন অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের অর্থ বণ্টন করা হবে।
নীতিমালা প্রণয়ন কমিটির সদস্য ও ইবির আইন বিভাগের অধ্যাপক শাহজাহান মন্ডল বলেন, নীতিমালা সংশোধনে এখন পর্যন্ত কোনো মিটিং আহ্বান করা হয়নি। আমি একাধিকবার প্রশাসনকে মিটিং আহ্বানের জন্য বলেছি। তারা কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, এফডিআর ফান্ডের টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আয় খাতে অন্তর্ভুক্ত হয়ে গিয়েছিল। বিষয়টি অনুধাবনের পর আমি এফডিআর ফান্ডের জন্য আলাদা অ্যাকাউন্ট করে দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান নীতিমালা অনুযায়ী আবেদনকৃত অসুস্থ শিক্ষার্থীরা সহায়তার আওতায় আসছে না। নীতিমালা সংশোধন প্রয়োজন।