দৈনিক শিক্ষা প্রতিবেদক: দেশের সর্ব উত্তরের জনপদ পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ঘনকুয়াশা ও উত্তরের হিমেল বাতাসে জবুথবু হয়ে পড়েছে জনজীবন। কয়েকদিন ধরে বয়ে চলছে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। আজ শীত আরও বেড়েছে। আজ তীব্র শৈত্যপ্রবাহ চলছে পঞ্চগড়ে। চলতি মৌসুমে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আজ রেকর্ড করা হয়েছে পঞ্চগড়ে। শুক্রবার সকালে ৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বিষয়টি দৈনিক আমাদের বার্তাকে নিশ্চিত করেছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক। তিনি জানান, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সকাল ৬টা ১ মিনিটে ৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
এছাড়া দেশের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টির আভাস দিয়েছেন আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক। তিনি বলেন, ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের অনেক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে।
সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেখানে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ থাকে বলে গণ্য করা হয়। ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা নামলে তা হয় মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা হলো তীব্র শৈত্যপ্রবাহ।
বৃহস্পতিবার ঢাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকায় হালকা বৃষ্টি ঝরেছে। তবে বৃষ্টি হলেও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আগের দিনের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। তারপরও দেশের ২১টি জেলায় বয়ে গেছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ।
জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে দেশজুড়ে শীতের যে দাপট চলছে, মাসের বাকি দিনগুলোতেও প্রায় একই রকম আবহাওয়া থাকবে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, ঢাকায় ছিল ১২ দশমিক ৪ ডিগ্রি। আর দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে ২৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ঢাকায় ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর বৃষ্টি হয়েছিল।
তাপমাত্রা বৃদ্ধির এ প্রবণতা আগামী দুই দিন থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, এরপর থেকে আবার তাপমাত্রা কমতে পারে। সে অনুযায়ী জানুয়ারিজুড়েই শীতের প্রকোপ থাকতে পারে। দক্ষিণাঞ্চলের আকাশে মেঘ আছে। উত্তরের বিভিন্ন এলাকায় কুয়াশার দাপট কমেনি।
আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা বলেন– কিশোরগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা জেলাসহ রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। কিছু কিছু এলাকায় তা প্রশমিত হলেও শীত থাকবে এ মাসজুড়েই।
এবারে শীত বেড়েছে জানুয়ারিতে এসে। গত ১১ জানুয়ারি দেশের উত্তরের কিছু জেলায় শুরু হয় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, সঙ্গে ছিল ঘন কুয়াশা আর উত্তরের হিম হাওয়ার দাপট। ২০ জানুয়ারির পর শৈত্যপ্রবাহের বিস্তার ঘটতে থাকে। তীব্র ঠান্ডায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে দেশ। কুয়াশার কারণে সড়ক, নৌ ও আকাশপথে যান চলাচল বিঘ্নিত হওয়ার খবরও মিলছে প্রায় প্রতিদিন। হাসপাতালগুলোয় ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত মানুষের ভিড়ও বাড়ছে। ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষ পড়েছে বিপাকে।
পারদ ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে যাওয়ায় বিভিন্ন জেলায় বন্ধ ঘোষণা করা হচ্ছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়। আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাসের সময় পিছিয়ে নেওয়া হয়েছে সকাল ১০টায়।