তিন দফা দাবিতে খুলনা মেডিক্যাল কলেজের (খুমেক) শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করেছেন। এর ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।
শিক্ষার্থীদের দাবি, হামলাকারীদের নামে মামলা ও গ্রেফতার, কলেজে মডেল ফার্মেসি ও পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন।
বুধবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে কলেজের ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, বহিরাগতরা বলপূর্বক তাদের ওপর হামলা চালায়। হামলার পর পুলিশ জানায়, রাত ১২টার মধ্যে সব আসামিকে গ্রেফতার করা হবে। শিক্ষার্থীরা সোমবার (১৪ আগস্ট) থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ তা নেয়নি। সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্লাসে ফিরবেন না।
খুমেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসা পরিষদের সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় রাতে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু থানায় অভিযোগকে মামলা আকারে নেয়নি। শিক্ষার্থীরা হামলাকারী ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারের দাবিতে ক্লাস বর্জন করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে চিকিৎসাসেবা বন্ধ রেখেছে।
দোষীদের গ্রেফতার না করার প্রতিবাদে ক্লাস বর্জনসহ তিন দফা দাবিতে খুমেকের সামনে বিক্ষোভ চলবে বলে জানান কর্মবিরতিতে থাকা ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
খুমেক হাসপাতালের পরিচালক মো. রবিউল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের তিনটি দাবির মধ্যে একটি দাবি হলো ৭২ ঘণ্টার মধ্যে খুমেক হাসপাতালে দুটি মডেল ফার্মেসি তৈরি করা। শিক্ষার্থীদের ওই দাবি মেনে নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ফার্মেসি তৈরি করার জন্য ইতোমধ্যে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটি কয়েক দিনের মধ্যে দরপত্র ডাকবে।
অন্যদিকে ওষুধ ব্যবসায়ীদের ওপর হামলা ও দোকান ভাঙচুরের প্রতিবাদে মেডিক্যাল কলেজের সামনের সব ফার্মেসি বন্ধ করে ধর্মঘট অব্যাহত রেখেছেন ব্যবসায়ীরা।
সোমবার রাত ৯টার দিকে ওষুধ কেনাকে কেন্দ্র করে ওষুধ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে খুমেকের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ শিক্ষার্থী ও নয়জন ওষুধ ব্যবসায়ী আহত হয়। এখন পর্যন্ত কোনো দোকান খোলেননি ওষুধ ব্যবসায়ীরা। আর ওইদিন থেকেই কর্মবিরতি পালন করছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরাও।
ঔষুধ ব্যবসায় সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির পরিচালক জিল্লুর রহমান জুয়েল বলেন, ‘হামলার ঘটনায় আমাদের নয় ব্যবসায়ী আহত হয়েছেন। শিক্ষর্থীরা একটি দোকানের ভেতরে ভাঙচুর চালিয়েছেন। অন্যান্য দোকানের শাটার ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন। তারা থানায় মামলা করলে আমরাও পালটা মামলা করবো।
এর আগে সোমবার রাতে খুমেক হাসপাতালের সামনের মেসার্স বিপ্লব মেডিসিন কর্নারে একজন মেডিক্যাল শিক্ষার্থী কিছু ওষুধ কিনতে যায়। সেখানে ছয় টাকার ওষুধ ৩০ টাকা নেন দোকানি। সবুজ সরকার নামের ওই মেডিক্যাল শিক্ষার্থী ওষুধের বেশি দাম নেওয়ার কারণ জানতে চান। কিন্তু দোকানি সঠিক উত্তর না দিলে উভয়ের মধ্যে বাক-বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে আশপাশের ওষুধের দোকানিরা এগিয়ে এলে উভয়পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। এ সময় ওষুধ ব্যবসায়ীরা এলাকাবাসীদের সঙ্গে নিয়ে মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের ২২ জন আহত হয়।