নরেন্দ্র মোদি টানা তৃতীয়বারের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় ৯ জুন শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগদান করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পর শুক্রবার (২১ জুন) দ্বিতীয়বারের মতো দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে আলোচনার জন্য দুইদিনের সফরে দিল্লি যান।
শনিবার সকাল দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এরপর দুই দেশের প্রতিনিধিদলের মধ্যে বৈঠকে ৭টি নতুন ও তিনটি নবায়নকৃতসহ ১০টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়।
সেদিন দুপুর ১২টা দিকে দুই দেশের উদ্যোগে যৌথ ঘোষণা আসে। এসময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে দুই দেশের মধ্যে যৌথ নদী কমিশনের আলোচনা ফের শুরু করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে ফের আলোচনা শুরু করার বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
সোমবার (২৪ জুন) তৃণমূল কংগ্রেসের এক সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতের টেলিভিশন চ্যানেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাখোশ বা অসন্তোষের খবর প্রকাশ করে।
খবরে সূত্রের বরাত দিয় বলা হয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো ‘ইস্যু’ নেই। বরং শেখ হাসিনা দিল্লি এলে তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান তিনি।
তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির বিষয়ে নিজের অসন্তোষ প্রকাশ করলেও ভারতের সঙ্গে মেডিকেল ই-ভিসা চালু সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
উল্লেখ্য, ৮ জুলাই চীন সফরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চীনও তিস্তা বাঁধ বিষয়ে অর্থায়নের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সে বিষয়টিও নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম উল্লেখ করেছে।
এদিকে, রোববার (২৩ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে দুই দেশের যৌথ নদীর কীভাবে একটি অভিন্ন ব্যবস্থাপনা করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রতিনিধি পর্যায়ের আলোচনায় দ্বিপাক্ষিক স্বার্থের অনেক বিষয় রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ৫৪টি অভিন্ন নদীর যৌথ ব্যবস্থাপনা, পানি বণ্টন, কনেকটিভিটি, বাণিজ্য, নিরাপত্তা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, ভারত থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে বাংলাদেশের জন্য কোটা প্রবর্তন, বাংলাদেশিদের জন্য দ্রুত চিকিৎসা এবং অংশীদারিত্বের উন্নয়ন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৫৪টি অভিন্ন নদী রয়েছে। নদীগুলোর জন্য যৌথ নদী ব্যবস্থাপনা গঠনের বিষয়টি প্রতিনিধি পর্যায়ে আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যৌথ নদী ব্যবস্থাপনা গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা করতে আমাদের সাহায্য করতে পারে।