নীলফামারীতে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে তিস্তা নদীর পানি। বৃহস্পতিবার ভোর ৬টায় ডালিয়ায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। দুপুরে কিছুটা কমলেও বিকেল ৩টায় বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ী, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী, গয়াবাড়ী, খগা খড়িবাড়ী ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের ১৫ গ্রামের কয়েক হাজার বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে।
এসব পরিবারের মধ্যে অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাচ্ছে বলে জানান স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান বলেন, ‘বুধবার রাত থেকে নদীর পানি বাড়তে শুরু করে। এতে বৃহস্পতিবার সকালে আমার ইউনিয়নের পূর্ব ছাতনাই এবং ঝাড়সিংহেশ্বর গ্রামের প্রায় এক হাজার পরিবারের বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করে। দুপুর ১২টায় পানি কিছুটা কমলে স্বস্তি ফেরে পরিবারগুলোর মধ্যে।
বিকেল ৩টায় ফের পানি বৃদ্ধিতে অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাচ্ছে।’
টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ময়নুল হক বলেন, তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে ইউনিয়নের টাপুর চর, পাগলার চর, টেপাখড়িবাড়ীসহ কয়েক গ্রামের পাঁচ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় অনেকে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে।
খালিশা চাপানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সহিদুজ্জামান সরকার বলেন, পানি বৃদ্ধির ফলে ইউনিয়নের ছোটখাতা ও বাইশপুকুর গ্রামের প্রায় এক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
দুপুরে পানি কিছুটা কমলেও বিকেলে ফের বাড়তে শুরু করেছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্র জানায়, উজানের ঢলে বুধবার রাতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপরে ওঠে। সকাল ৯টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকার পর বেলা ১২টায় ছয় সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বিকেল ৩টায় ফের চার সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসফাউদদৌলা বলেন, উজানের ঢলে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
পরিস্থিতি স্বভাবিক রাখতে ব্যারাজের সব জলকপাট (৪৪টি) খুলে রাখা হয়েছে।
ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘আমরা সর্বদা পর্যবেক্ষণ করছি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের পানিবন্দি মানুষের তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে। সেটি পেলে জানা যাবে কী পরিমাণ মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। আমাদের পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ রয়েছে। প্রয়োজন হলেই ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হবে।’