দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: ভারতের সঙ্গে অমীমাংসিত ইস্যুগুলোর মধ্যে অন্যতম তিস্তা নদীর পানি বণ্টন। বিষয়টি নিয়ে গত এক যুগ ধরে নানা আলোচনা হলেও আলোর মুখ দেখেনি তিস্তা চুক্তি। ভারত সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাংলাদেশ সফরে এলে আলোচনায় গুরুত্ব পায় তিস্তা। এবারও ঢাকায় সফররত দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রার সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ওই বৈঠকে তিস্তা প্রকল্পে অর্থায়নের আগ্রহ প্রকাশ করেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব।
বৃহস্পতিবার (৯ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঢাকা সফররত ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রার সঙ্গে হাছান মাহমুদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, তিস্তায় আমরা একটা বড় প্রকল্প নিয়েছি। ভারত সেখানে অর্থায়ন করতে চায়। আমি বলেছি, তিস্তায় যে প্রকল্পটি হবে সেটা আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী হবে। আমাদের প্রয়োজন যেন পূরণ হয়।
তিস্তায় ভারতের মতো চীনও অর্থায়ন করতে চাচ্ছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ প্রকল্পে ভারতের আগ্রহের বিষয়টি আজই আলোচনা হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের বহুমাত্রিক সম্পর্ক। অত্যন্ত চমৎকার সম্পর্ক। যে সম্পর্ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। আমরা কানেক্টিভিটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
বাংলাদেশিদের জন্য ভারতীয় ভিসা সহজ করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, প্রতি বছর বাংলাদেশিদের জন্য ১৬-১৭ লাখ ভিসা ইস্যু করে ভারত। বিশ্বে সর্বোচ্চ ভিসা ইস্যু করে বাংলাদেশে। অনেক সময় ভিসা পেতে অপেক্ষা করতে হয়, সেটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
হাছান মাহমুদ বলেন, ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেছেন, এখানকার (বাংলাদেশে ভারতীয় ভিসা কেন্দ্রে) সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য তারা আরও লোকবল নিয়োগ করছেন এবং কোনো উদ্ভাবনী প্রক্রিয়ায় করা যায় কি না তা দেখছেন। আমি অনলাইনের কথা বলেছি। অনলাইনে আবেদন করার কথা বলেছি, যেন সহজে মানুষ ভিসা পায়। তারা এ বিষয়ে অত্যন্ত আন্তরিক।
ভারতের ওপর দিয়ে নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়েও আলোচনা হয় বৈঠকে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা ফিজিক্যাল কানেক্টিভিটি নিয়ে আলোচনা করেছি। সেটা অনেক দূর এগিয়েছে। বিশেষ করে, নেপাল এবং ভুটানকে ট্রানজিট দেওয়া এবং এ দুই দেশ থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করা। ইতোমধ্যে নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করার ক্ষেত্রে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ট্যারিফ নিয়েও আলোচনা অনেকটা চূড়ান্ত হয়েছে। সেটি আমাদের ক্রয় কমিটেতে যাবে। সেটি হলে ভারতের ওপর দিয়ে আমরা নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করতে পারব।
এছাড়া সীমান্ত হত্যা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।