ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে মাসুদ কামাল তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যায় সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে আট শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। সেইসঙ্গে হলে নতুন প্রভোস্ট নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ।
আরো পড়ুন: তোফাজ্জল হত্যা: ঢাবি ছাত্র জালালের শাস্তি চান গ্রামবাসী
তিনি আরও জানান, এখনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। ছাত্র-শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনায় সিদ্ধান্ত হবে।
এর আগে গতকাল শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আদালতে নেয়া হলে বিচারকের খাস কামরায় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন গ্রেফতার হওয়া ছয় শিক্ষার্থী। পরে আদালতের নির্দেশে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
গত বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের সুপারভাইজার মোহাম্মদ আমানুল্লাহ বাদী শাহবাগ থানায় মামলা করেন। পরে বিকেলে ঢাবির প্রক্টরিয়াল টিম ও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় অভিযুক্ত ছয়জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ৮টার দিকে একজন যুবক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের গেটে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে থাকলে কিছু ছাত্র তাকে আটক করেন। প্রথমে ফজলুল হক মুসলিম হলের মূল ভবনের গেস্টরুমে নিয়ে তিনি মোবাইল চুরি করেছেন অভিযোগ তুলে এলোপাতাড়ি চর-থাপ্পড় ও কিলঘুষি মারেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাকে জিজ্ঞাসা করলে তার নাম তোফাজ্জল বলে জানান।
মানসিক রোগী বুঝতে পেরে তাকে ফজলুল হক মুসলিম হলের ক্যান্টিনে নিয়ে খাওয়ানো হয়। পরে ফজলুল হক মুসলিম হলের দক্ষিণ ভবনে গেস্ট রুমে নিয়ে জানালার সঙ্গে পেছনে হাত বেঁধে স্ট্যাম্প, হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছাত্র বেধড়ক মারধর করলে তোফাজ্জল অচেতন হয়ে পড়েন।
আরো পড়ুন: তোফাজ্জল হত্যার ঘটনায় যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে ঢাবি প্রশাসন
বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষককে জানালে তাদের সহায়তায় তোফাজ্জলকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে ১২টা ৪৫ মিনিটের সময় তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।