বছরের পর বছর মেডিক্যাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বিভিন্ন কোচিং সংশ্লিষ্ট কয়েকডজন ডাক্তার গ্রেফতার হয়েছেন। আরো কয়েকজন গ্রেফতারের তালিকায় রয়েছেন। সর্বশেষ খবরে জানা গেছে খুলনার থ্রি ডক্টরস কোচিং সেন্টারের মালিককে আটক করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তার নাম ডা. ইউনুস খান তারিম। গতকাল শুক্রবার সকালে তাকে খুলনা থেকে আটক করে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ডা. তারিমের আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন খুলনা সদর থানার ওসি হাসান আল মামুন।
পুলিশ একটি সূত্র জানায়, ডা. ইউনুস খান তারিম মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত। তিনি তার মালিকানাধীন থ্রি ডক্টরস কোচিং সেন্টারের মাধ্যমে মেডিকেল কলেজে ভর্তির প্রশ্নপত্র ফাঁস করে গত ১৬ বছরে কোটি কোটি টাকা আয় করেছেন।
সূত্র জানায়, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একটি গোয়েন্দা সংস্থা এ বিষয়ে অনুসন্ধান শেষে এক প্রতিবেদনে বলেছে, খুলনার এ কোচিং সেন্টার ভর্তিবাণিজ্যের মাধ্যমে ‘মেধাহীন’, ‘অযোগ্য’ ছাত্রছাত্রীদের মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ করে দিচ্ছে। এর মাধ্যমে জনপ্রতি ৩৫ থেকে ৪০ লাখ টাকা করে নিচ্ছে। এ ভর্তিবাণিজ্যের মাধ্যমে বছরে শতকোটি টাকার বেশি অবৈধ লেনদেন হচ্ছে।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে, উদাহরণ হিসেবে কিছু শিক্ষার্থীর ফলাফল বিবরণীর বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়, যারা থ্রি ডক্টরসে কোচিং করেছেন। তাতে দেখা যায়, তারা কেউ এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ ৫ পায়নি। তবে ভর্তি পরীক্ষায় ৭৩ করে নম্বর পেয়েছে। একজন ৭৩.২৫ নম্বর পেয়েছে।
একটি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, তাদের পড়াশোনা ও জ্ঞান এত নিম্নমানের যে তারা কীভাবে মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার মতো কঠিন পরীক্ষা সম্পন্ন করেছেন, তা বোধগম্য নয়।
সূত্র জানায়, সম্প্রতি সিআইডি ওই চক্রের ১২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মধ্যে সাতজনই চিকিৎসক। এসব চিকিৎসকের মধ্যে বিএনপি ও জামায়াতপন্থি চিকিৎসক রয়েছেন। তদন্তের ধারাবাহিকতায় খুলনার থ্রি ডক্টরস কোচিং সেন্টারের মালিক ডা. তারিমকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে দৈনিক শিক্ষাডটকম এর অনুসন্ধানে জানা গেছে মেডিক্যাল ভর্তি কোচিং সংশ্লিষ্ট অনেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন। তারা নিয়মিত অফিস করছেন না।