‘দাফনের’ দুই দিন পর ভিডিও ফোন করে জীবিত থাকার কথা জানানো ফরিদপুরের সদরপুরের সেই নারী হাসি বেগম (২৪) আবার লাপাত্তা হয়েছেন। আদালতে জবানবন্দি দেয়ার পর পুলিশ ওই নারীকে তার বাবার কাছে বুঝিয়ে দেন। বুধবার বিকাল ৪টার দিকে আদালত চত্বর থেকে উধাও হন হাসি।
হাসি বেগমের বাবা হাবিবুর রহমান বৃহস্পতিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের শৌলডুবী গ্রামের বাসিন্দা।
হাবিবুর রহমান বলেন, আদালত থেকে জবানবন্দির নেওয়ার পর সদরপুর থানার পুলিশ হাসিকে আমার জিম্মায় দিয়েছিল। পরে আমি হাসিকে রেখে বাথরুমে যাই, এসে দেখি হাসি নেই। হাসিকে না পেয়ে আমি কোর্টের বিভিন্ন জায়গায় অনেকক্ষণ খোঁজাখুঁজি করে ক্লান্ত হয়ে যাই। কিন্তু এক থেকে দেড় ঘণ্টা খোঁজাখুঁজি করেও হাসিকে পাইনি। এরপর সন্ধ্যা হয়ে গেলে আমি বাড়ির দিকে চলে আসি।
হাসি বেগমের কথিত লাশ শনাক্তের পর ২২ সেপ্টেম্বর তার বাবা হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে জামাতা মোতালেব শেখকে আসামি করে সদরপুর থানায় ‘পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ গুম করার’ অভিযোগে একটি মামলা করেন। মামলার পর মোতালেবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরই মধ্যে সোমবার হাসি বেগমকে জীবিত উদ্ধার করে পুলিশ। পরে মোতালেবকে ছেড়ে দেয়া হয়। হাসিকে উদ্ধারের পর হত্যা মামলার চার্জশিট দেয়ার উদ্যোগ নেয় পুলিশ। এরই অংশ হিসেবে বুধবার দুপুরের দিকে হাবিবুর রহমান ও হাসিকে আদালতে আনা হয়। সেখানে হত্যা মামলার বাদী হাবিবুর ও ভিকটিম হাসি বেগমের জবানবন্দি নেওয়া হয়।
সদরপুর আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) মনি মোহন সিং বলেন, সদরপুর থানায় করা হত্যা মামলাটি মিথ্যা। গত ২২ সেপ্টেম্বর করা মামলাটি শেষ করতে বাদী ও ভুক্তভোগীর জবানবন্দি নথিভুক্ত করেছেন আদালত। মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ৪ অক্টোবর।
সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মামুন আল রশিদ বলেন, হাসিকে জীবিত উদ্ধারের পর হত্যা মামলাটি অর্থহীন হয়ে পড়ায় সেটির চার্জশিট দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ। এই কারণে আদালতে বাবা ও মেয়ের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। জবানবন্দির পর হাবিবুরের কাছে তার মেয়েকে বুঝিয়ে দেয় পুলিশ।
ওসি আরও বলেন, হাসি পুলিশকে জানিয়েছেন, ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইলের এক তরুণকে তিনি বিবাহ করেছেন। কিন্তু তার এই কথা মূল্যহীন। কারণ তিনি বিবাহিত এবং তার প্রথম স্বামী মোতালেবকে তিনি তালাক দেয়নি। হাসি বেগমের সঙ্গে তার স্বামীর বয়সের ব্যবধান অনেক। বুধবার বিকেলে আদালতে জবানবন্দি দেয়ার পর হাসি বেগমকে তার বাবার জিম্মায় দেয়া হয়েছে। এরপর হাসি বেগম কোথায় গেছেন, তা পুলিশের জানা নেই।